ঢাকা রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ব্যাংক হিসাব ও আমানত বেড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষের

ব্যাংক হিসাব ও আমানত বেড়েছে স্বল্প আয়ের মানুষের

দেশে ২০১০ সালে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সুবিধা দিতে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকার ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ করে দিয়েছিল সরকার। এগুলোকে নো-ফ্রিলস অ্যাকাউন্ট (এনএফএ) বলা হয়। তবে, স্কুল ব্যাংকিং ও কর্মজীবী শিশুদের অ্যাকাউন্ট এই হিসাবের বাইরে। এই নো-ফ্রিলস অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্স বা সার্ভিস চার্জ বা ফি নেই। সমাজের সব স্তরের মানুষের আর্থিক সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিভিন্ন উদ্যোগের আওতায় এসব অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এছাড়া, সাধারণ চলমান সঞ্চয় হারের তুলনায় নো-ফ্রিলস অ্যাকাউন্টগুলোতে বেশি হারে সুদ দেওয়া হয়। এই ব্যাংকিং সুবিধাভোগীর মধ্যে আছেন- কৃষক, পোশাক শ্রমিক, অতি দরিদ্র, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধাভোগীরাসহ অনেকে। ২০২৫ সালের মার্চ শেষে এসব মানুষের সঞ্চয় ও হিসাব সংখ্যা বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সালের মার্চ শেষে এসব ব্যাংক হিসাবে আমানত দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। আর ২০২৪ সালের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল চার হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে স্বল্প আয়ের মানুষের ব্যাংক হিসাবে জমা বেড়েছে ৯৭ কোটি টাকা বা দুই দশমিক শূন্য তিন শতাংশ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকা দিয়ে খোলা স্বল্প আয়ের মানুষের ব্যাংক হিসাবে আমানতের পরিমাণ ছিল চার হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের মার্চ শেষে এসব হিসাবে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা।

সেই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে ১০, ৫০ ও ১০০ টাকা দিয়ে খোলা হিসাবে আমানত বেড়েছে ২০৩ কোটি টাকা চার দশমিক ৩৫ শতাংশ। তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোতে নো ফ্রিল অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ছিল দুই কোটি ৮১ লাখ ২৩ হাজার ৩৯০টি। আর চলতি বছরের মার্চ শেষে ব্যাংকগুলোতে স্বল্প আয়ের মানুষের অ্যাকাউন্ট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে দুই কোটি ৮২ লাখ ৩৬ হাজার ৭৭০টি। সেই হিসাবে তিন মাসে অ্যাকাউন্ট সংখ্যা বেড়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৩৮০টি। খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত কয়েক মাস আগেও দেশে ব্যাপক রাজনৈতিক অস্থিরতা বিরাজ করেছিল। তবে এরপরে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সংকট কিছুটা কাটতে শুরু করেছে। আর এতেই দেশের ব্যাংকিং খাতের উপর মানুষের আস্থা ফিরতে শুরু করেছে। এর ফলে স্বল্প আয়ের মানুষেরাও ব্যাংকে টাকা রাখতে শুরু করেছে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোকে ঠিক করতে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকও বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এসব কারণে ব্যাংকে আমানত ফিরতে শুরু করেছে। তথ্য বলছে, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে এসব হিসাবের মাধ্যমে আসা মোট প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ৭৭২ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। আর চলতি বছরের মার্চ শেষে এসব হিসাবের প্রবাসী আয় এসেছে ৭৭৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা। সেই ৩ মাসে এসব হিসাবে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৫ কোটি টাকা। যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরের রেমিট্যান্সের তুলনায় ছয় দশমিক ১৬ শতাংশ বেশি। এছাড়া, গত বছরের ডিসেম্বর শেষে নো-ফ্রিলস হিসাবের আওতায় কৃষকদের আমানতের পরিমাণ ছিল ৭৩০ কোটি, অতি দরিদ্রদের ছিল ২৪৮ কোটি, পোশাক শ্রমিকদের ছিল ৩৬৭ কোটি, মুক্তিযোদ্ধাদের হিসাবে ৯১৩ কোটি, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের হিসেবে ১ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। আর চলতি বছরের মার্চ শেষে এসব হিসাবে কৃষকদের আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭১৮ কোটি, অতি দরিদ্রদের ২৩১ কোটি, পোশাক শ্রমিকদের ছিল ৪৬৭ কোটি, মুক্তিযোদ্ধাদের হিসাবে ১০১৩ কোটি, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের হিসেবে এক হাজার ৭৩১ কোটি টাকা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত