জাতীয় ফল মেলা ২০২৫ শুরু, দেশি ফল খাওয়ার আহ্বান। রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) প্রাঙ্গণে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী জাতীয় ফল মেলা ২০২৫। মেলার উদ্বোধন করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) সকালে মেলার উদ্বোধন করেন উপদেষ্টা। আগামী ২১ জুন শনিবার পর্যন্ত চলবে এ মেলা।
এবারের জাতীয় ফল মেলার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে- ‘দেশি ফল বেশি খাই, আসুন ফলের গাছ লাগাই’। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষকে পুষ্টিকর খাবার পৌঁছে দিতে সরকার নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। বর্তমানে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক ফলের চাহিদা যেখানে ২০০ গ্রাম, সেখানে আমরা খাচ্ছি মাত্র ৫৫-৬০ গ্রাম। এই ব্যবধান কমাতে ফলের উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি জনগণকে ফল খাওয়ায় অভ্যস্ত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, চালের উৎপাদনে আমরা যেমন বিপ্লব করেছি, তেমনি ফল উৎপাদনেও বিপ্লব ঘটাতে চাই। দেশি ফল যাতে বিলুপ্ত না হয়, সেজন্য এর জার্মপ্লাজম সংরক্ষণের কাজও চলছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে তিনি মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন এবং ফল উৎপাদনে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রশংসা করেন। মেলায় সরকারি পর্যায়ে ২৬টি ও বেসরকারি পর্যায়ে ৪৯টি, সর্বমোট ৭৫টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করছে। দর্শনার্থীরা বিভিন্ন ধরনের দেশি ফল ও ফল চাষ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানার পাশাপাশি রাসায়নিকমুক্ত ফল ক্রয়ের সুযোগ পাচ্ছেন। রাজধানী ছাড়াও দেশের ৬৪টি জেলার ৪৩১টি উপজেলায় স্থানীয় পর্যায়েও ফল মেলা আয়োজন করা হয়েছে।
মেলা উপলক্ষে কেআইবি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় একটি বিশেষ সেমিনার ‘স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও বাণিজ্যিকীকরণে দেশি ফল: বর্তমান পরিপ্রেক্ষিত, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান। স্বাগত বক্তব্য দেন, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবু জুবাইর হোসেন বাবলু। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আজিজুর রহমান।
আলোচনায় অংশ নেন, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণা পরিচালক ড. মুন্সী রাশীদ আহমদ এবং খাদ্য প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ গোলজারুল আজিজ।
কৃষি সচিব বলেন, দেশীয় ফলের পরিচিতি ও সম্ভাবনাকে তুলে ধরতেই এই মেলার আয়োজন। এ মেলায় দর্শনার্থীরা বিলুপ্তপ্রায়, অপ্রচলিত ও সম্ভাবনাময় বিভিন্ন জাতের ফল সম্পর্কে জানতে পারছেন এবং ফল চাষের নতুন প্রযুক্তি সম্পর্কেও ধারণা নিতে পারছেন।