ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রত্যাবর্তন সহজ করতে সুপারিশ চূড়ান্ত

বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রত্যাবর্তন সহজ করতে সুপারিশ চূড়ান্ত

বাংলাদেশের রিপ্যাট্রিয়েশন (প্রত্যাবর্তন) কাঠামো সহজ, গতিশীল ও আধুনিক করার লক্ষ্যে Repatriation of Sale Proceeds in Private and Public Limited Companies সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি একটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কার সুপারিশমালা চূড়ান্ত করেছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ ব্যাংক, UNDP এবং বেসরকারি খাতের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত এই জাতীয় কমিটি একাধিক ধাপে কারিগরি আলোচনা সম্পন্ন করে। এরপর ভ্যালুয়েশন বিশেষজ্ঞ, মার্চেন্ট ব্যাংক, বেসরকারি বানিজ্যিক ব্যাংক এবং আইনজীবীদের পরামর্শেরভিত্তিতে কমিটি চূড়ান্ত সুপারিশ তৈরি করা হয়েছে।

গত ১৮ নভেম্বর বিডার নির্বাহী সদস্য ও জাতীয় কমিটির প্রধান নাহিয়ান রহমান রোচি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের কাছে সুপারিশ উপস্থাপন করেন। উল্লেখ্য যে, ২৯ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক-এর গভর্নর এবং বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যানের নির্দেশে এই জাতীয় কমিটি গঠিত হয়, যার মূল দায়িত্ব বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাবর্তন সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জসমূহ পর্যালোচনা করে একটি আধুনিক ও কার্যকর সংস্কার প্রণয়ন করা। মূল সুপারিশসমূহ হল- বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর যাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পূর্ব অনুমোদন ছাড়া প্রত্যাবর্তনের অধিকাংশ কেইস প্রক্রিয়াকরণ করতে পারে সেই লক্ষ্যে repatriation approval threshold এর উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি প্রয়োজন। সময়াবদ্ধ প্রত্যাবর্তন সেবা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রত্যাবর্তন সংক্রান্ত সেবার ক্ষেত্রে Service Level Agreements (SLA) প্রবর্তন। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠিত কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে নথিপত্রের পরিমাণ কমিয়ে, সমসাময়িক ও বৈশ্বিকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ মূল্যায়ন মানদ- যুক্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান নির্দেশিকাগুলো হালনাগাদ করা। জটিল-বিতর্কিত কেইস নিষ্পত্তি ও ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদানের জন্য প্রত্যাবর্তন পর্যালোচনা কমিটি গঠন। দ্রুত সম্প্রসারিত হয় এমন ব্যবসা ও স্টার্টাপের জন্য পৃথক নীতিমালা ও মূল্যায়নের কাঠামো প্রণয়ন (২০২৬-এর প্রথম তিন মাসের মধ্যে)। মূল্যায়ন করে এমন কোম্পানিগুলোকে লাইসেন্স ও সনদ প্রদানের লক্ষ্যে দীর্ঘমেয়াদে National Valuation Certification Authority প্রতিষ্ঠা। Authori“ed Dealer (AD) ব্যাংক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ ও জনবল বৃদ্ধি নিশ্চিতকরণ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এই বিষয়ে বলেন, ‘আধুনিক এবং বিনিয়োগবান্ধব আর্থিক পরিবেশ গড়ার আমাদের যে অঙ্গীকার তা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়েছে এই সুপারিশসমূহে। বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের কাছে নির্ভরযোগ্য ও আকর্ষণীয় গন্তব্য হিসেবে বাংলাদেশকে প্রতিষ্ঠিত করতে দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে স্বচ্ছতা বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।’ বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী বলেন, ‘বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এটি একটি বড় পদক্ষেপ। এই কাঠামোটি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য দ্রুত সেবা নিশ্চিত করবে যেটি বাংলাদেশের প্রতি আস্থা বৃদ্ধির বৃহত্তর লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করবে। নিষ্ঠা, পেশাদারিত্ব এবং সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে জাতীয় কমিটি একটি পূর্ণাঙ্গ সংস্কার প্যাকেজ স্বল্প সময়ের মধ্যে উপস্থাপন করেছে। এ জন্য আমি তাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত