বিপিএলে এ নিয়ে তৃতীয়বার ফাইনাল খেলতে যাচ্ছে ফরচুন বরিশাল। গত আসরে শিরোপা জিতে এবারও তা ধরে রাখতে হট ফেভারিট তামিম ইকবালের দল। ফেভারিট হয়ে নামা বরিশাল মাঠেও খেলছে সেরাদের মতো। টেবিলের শীর্ষে থেকে প্লে অফ নিশ্চিত করে ফাইনালেও উঠে যায় হেসেখেলে। ধারাবাহিক এমন সাফল্যের রহস্য জানিয়েছেন দলটির কোচ মিজানুর রহমান বাবুল। গতকাল বুধবার অনুশীলন শেষে সংবাদ সম্মেলনে দলটির কোচ জানান, টিম বন্ডিংয়ের কারণেই বরিশালের এমন সাফল্য।
গ্রুপ পর্বে দুয়েকটি ম্যাচ জয়ের কাছাকাছি গিয়ে হারলেও বাকি ম্যাচগুলোতে দাপট দেখিয়েছে বরিশাল। তামিম ইকবালরা সেই দাপট অব্যাহত রেখেছে প্রথম কোয়ালিফায়ারেও। চিটাগং কিংসকে উড়িয়ে দিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনাল নিশ্চিত করেছে তারা। আরো একটি শিরোপার কাছে দাঁড়িয়ে টিম বন্ডিংয়ের কথাই জানালেন মিজানুর রহমান, ‘আমাদের যে দলটা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, ওই দলটা ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। তো ফলাফল পাওয়ার কারণ হলো বন্ডিং। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। যখন খেলতে আসে দলের প্রতি একটা ফিলিংস কাজ করে। এই দরদের থেকেই ফল বের হয়। বেশিরভাগ ক্রিকেটার গত আসরে যারা খেলেছে, এবারও তারাই আছে। এটা একটা কারণ ফাইনালে ওঠার।’
বরিশালের কোচ আরো যোগ করে বলেছেন, ‘আমরা যখন দল বানিয়েছি, সবাই বলেছে আমরা চ্যাম্পিয়ন দল। মিডিয়া বলেছে। ক্রিকেটাররাও বলেছে, আপনাদের তো খেলার দরকার নেই। এভাবে মজা নিয়েছে। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্যই আমরা দল করেছি। আমাদের টিম কম্বিনেশন দেখলেও তাই মনে হয়। চ্যাম্পিয়ন হতে পারব কি না সেটা ৭ তারিখে বোঝা যাবে। তবে আমরা ফাইনালে উঠেছি। আমাদের কম্বিনেশন, টিম বন্ডিং কাজ করেছে। আমরা প্রথম দিন থেকেই চেয়েছি যে ফাইনাল খেলবো। আমরা সেই লক্ষ্যেই এগিয়েছি এবং যেতে পেরেছি।’ আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির ফাইনালে শিরোপার লড়াইয়ে মাঠে নামবে। বরিশাল অবশ্য প্রতিপক্ষ নিয়ে ভাবছেন না, ‘প্রতিপক্ষ হিসেবে যে কেউই আসুক, আমাদের খেলতে হবে। আমি যদি বলি, একে চাই, ওকে চাই তাহলে অন্য একটা দলকে ছোট করা হবে। যে-ই আসুক, তাদের হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন হতে হবে। দুই দলের প্রতিই শুভকামনা রইল। যারাই আসুক, তাদের সঙ্গে আমরা খেলবো।’ পুরো আসরে সব ম্যাচ খেললে রানে ছিলেন না তাওহীদ হৃদয়। তবে প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে রানে ফিরেছেন এই তরুণ। তাওহীদের ফর্ম নিয়ে বরিশালের কোচ জানালেন, ‘তাওহীদ হৃদয়ের প্রতি সবসময় আমাদের বিশ্বাস ছিল। আমরা যখন তাকে নিয়েছি... সে এখন বাংলাদেশের সেরা ব্যাটারের একজন। আমরা সেভাবেই তাকে নিয়েছি। শুরু থেকেই তার একটা রানের ক্ষুধা ছিল, সে রান করতে চায় সবসময়। আমরা তাকে সবসময় ব্যাক করেছি। সবশেষ ম্যাচে সে রান করেছে। এছাড়া সে যেন ডিমোরালাইজ না হয় বা কোনো কিছু না হয়, সেটা আমরা আমাদের তরফ থেকে চেষ্টা করেছি যে, যে কোনো সময় তুমি রান করবা।’
রানে ফেরার টোটকা হৃদয় নিজ উদ্যোগেই পেয়েছেন উল্লেখ করে কোচ বলেছেন, ‘নিজের উদ্যোগেই কীভাবে কোন প্রক্রিয়ায় রান করা যাবে, সে নিজে বের করেছে। আমরা তাকে অনুশীলনে বা অন্যভাবে মানসিকভাবে সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি।’ কোচ হিসেবে বেশ সফল মিজানুর। গতবার বরিশাল তার কোচিংয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। জাতীয় লিগের (টি-টোয়েন্টি) চ্যাম্পিয়ন না হলেও ঢাকা মেট্রো ফাইনাল খেলেছিল। সেই দলের কোচ ছিলেন তিনি। এর বাইরে জাতীয় লিগ লংসার ভার্সনে বেশ কিছু দলের সফল কোচও তিনি। তারপরও তাকে আন্ডাররেট করা হয়। যদিও বাংলাদেশের স্থানীয় কোচদের সবাইকেই কম বেশি আন্ডাররেট করা হয়। এ প্রসঙ্গে মিজানুর গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আন্ডাররেটেড করে... কারা রেট করে, কীভাবে রেট করে সেটা তো আসলে যারা রেট করে তারা বুঝবে।
আমার কাজ হলো কোচিং করানো, ভালো কিছু করা। আমি চেষ্টা করি আমার তরফ থেকে। যারা বিচার করবে, আরেকটা জায়গা থেকে। তারা তাদের দৃষ্টিতে... ওইটা তো আমার হাতে নেই। আমার হাতে যেটা, আমি চেষ্টা করি একটা দলকে কীভাবে সমন্বয় করা যায়। এই বছর আমার ভালো হচ্ছে। জাতীয় লিগে চার দিনের সংস্করণ ও টি-টোয়েন্টিতে আমার দল ফাইনাল খেলেছে। গত বছর বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এবছরও আমার দল ফাইনালে উঠেছে। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।’