২০২৬ বিশ্বকাপে কারা খেলবে, কোট ৪৮টি দল যোগ্যতা অর্জন করবে, সে লক্ষ্যে বাছাই পর্ব শুরু হয়েছিল আরও দুই বছর আগে থেকে। ১২ অক্টোবর ২০২৩ সালে। এশিয়ান অঞ্চলের ছোট কয়েকটি দেশকে নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছিল প্রথম রাউন্ডের খেলা। প্রথম ম্যাচেই মায়ানমার ৫-১ গোলে হারিয়েছিল ম্যাকাওকে। এরপর থেকে একে একে ৬টি কনফেডারেশনের প্রতিটিতেই শুরু হয় বাছাই পর্ব। এরই মধ্যে বেশ কিছু দল ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করে ফেলেছে। তবে অধিকাংশ জায়গাই এখনও শূন্য। একে একে কনফেডারেশনগুলোয় বাছাই পর্বের মাধ্যমে সেই জায়গাগুলো পূরণ করা হবে।
কোন মহাদেশ থেকে কতটি দল সুযোগ পাবে : ৬টি কনফেডারেশন থেকে ৪৮টি দলকে বাছাই করা হবে। এর মধ্যে কনকাকাফ (উত্তর ও মধ্য আমেরিকা) থেকে তিন আয়োজক এবং বাছাই পর্ব থেকে ৩টিসহ মোট ৬টি দল খেলবে বিশ্বকাপে। দক্ষিণ আমেরিকা তথা কনমেবল থেকে সরাসরি খেলার সুযোগ পাবে ৬টি দল। এশিয়ান কনফেডারেশন (এএফসি) থেকে বিশ্বকাপে খেলবে মোট ৮টি দেশ। আফ্রিকান কনফেডারেশন (সিএএফ) থেকে খেলবে ৯টি দেশ। ইউরোপ (উয়েফা) থেকে খেলবে ১৬টি দেশ এবং ওশেনিয়ান (ওএফসি) থেকে খেলবে ১টি দেশ। ২টি দেশ খেলবে ইন্টার কন্টিনেন্টাল (আন্তঃমহাদেশীয়) প্লে-অফ থেকে।
অটোমেটিক ও কনকাকাফ (উত্তর ও মধ্য আমেরিকা) : ২০২৬ বিশ্বকাপে অটোমেটিক কোয়ালিফাই করেছে তিনটি দল। তিন আয়োজক যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং মেক্সিকো। আয়োজক হিসেবে এই তিনটি দেশকে বাছাই পর্ব খেলতে হচ্ছে না। কনকাকাফ থেকে আরও তিনটি দল খেলবে বিশ্বকাপে। বাছাই পর্বে এরই মধ্যে তৃতীয় রাউন্ড শেষ হয়েছে। চতুর্থ রাউন্ডের ড্র হবে আজ। এ রাউন্ড থেকেই তিনটি দল নির্ধারিত হবে।
কনমেবল (লাতিন আমেরিকা) : লাতিন আমেরিকা থেকে ৬টি দল বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। এরই মধ্যে তিনটি দল বিশ্বকাপে জায়গা নিশ্চিত করে ফেলেছে। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল এবং ইকুয়েডর। ১৮ রাউন্ডের বাছাই পর্বে মোট ১৬ রাউন্ড হয়ে গেছে। প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে এবং কলম্বিয়া রয়েছে পরের তিন স্থানে, যদিও তারা বিশ্বকাপ নিশ্চিত করতে পারেনি।
এএফসি (এশিয়া) : এশিয়ান অঞ্চলের বাছাই পর্বে তৃতীয় রাউন্ডের সবগুলো খেলা এরই মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। তৃতীয় রাউন্ড থেকে ৬টি দেশ বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করে ফেলেছে এরই মধ্যে। দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ইরান, অস্ট্রেলিয়া, উজবেকিস্তান এবং জর্ডান। এর মধ্যে উজবেকিস্তান ও জর্ডান প্রথমবারেরমত বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে। এশিয়া থেকে আরও দুটি দেশ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পাবে। তবে, ওই দুটি দল নির্ধারণ হবে চতুর্থ রাউন্ড থেকে। তৃতীয় রাউন্ড থেকে চতুর্থ রাউন্ডে উঠেছে ৮টি দল। তারা হলো আরব আমিরাত, কাতার, ইরাক, ওমান, সৌদি আরব এবং ইন্দোনেশিয়া। এই আট দলকে দুই গ্রুপে ভাগ করা হবে। এই দুই গ্রুপের শীর্ষ দুটি দলও উঠবে বিশ্বকাপে।
ওএফসি (ওশেনিয়া): এই প্রথম ওশেনিয়া মহাদেশ থেকে একটি দল নিশ্চিত বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে। ফিফা কংগ্রেসে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে, ওশেনিয়া থেকে বাছাইকৃত দেশকে আর ইন্টার কন্টিনেন্টাল প্লে অফ খেলতে হবে না। তারা সরাসরি খেলবে বিশ্বকাপে। সে হিসেবে ওএফসি থেকে এরই মধ্যে বিশ্বকাপে খেলা নিশ্চিত করে ফেলেছে নিউজিল্যান্ড।
সিএএফ (আফ্রিকা) : আফ্রিকান অঞ্চল থেকে ৯টি দেশ বিশ্বকাপে খেলবে। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে বাছাই পর্ব শুরু হয়। মোট ৫৩টি দেশ অংশ নিচ্ছে বাছাই পর্বে। ছিল ৫৪ দেশ। ৯ গ্রুপে ভাগ করা হয় দলগুলোকে। যদিও ‘ই’ গ্রুপে থাকা ইরিত্রিয়া পরে নিজেদের নাম প্রত্যাহার করে নেয়। ৯ গ্রুপ থেকে সেরা ৯টি দল খেলবে বিশ্বকাপে। চলতি বছর নভেম্বরের মধ্যে শেষ হবে আফ্রিকান বাছাই পর্ব। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনো দলই নিশ্চিত করতে পারেনি বিশ্বকাপে তাদের আসন।
উয়েফা (ইউরোপ) : বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ১৬টি দল খেলবে ইউরোপ থেকে। ৫৪টি দেশকে ভাগ করা হয়েছে ১২ গ্রুপে। প্রতি গ্রুপের শীর্ষ দেশ খেলবে বিশ্বকাপে।