কোর্টের খেলায় তখন খানিক বিরতি। তবে গ্যালারি থেকে ভেসে এলো হুল্লোড়ের সুর। সেখানে চলছে জীবনের খেলা! লুইস আর্মস্ট্রং স্টেডিয়ামের প্রায় ১৪ হাজার দর্শকের সামনে হাঁটু গেড়ে আংটি বাড়িয়ে ধরে এক প্রেমিক বিয়ের প্রস্তাব দিলেন তার প্রেমিকাকে। লজ্জা, বিস্ময় আর ভালোবাসার মাখামাখি চেহারায় দু হাতে মুখ ঢেকে ফেললেন মেয়েটি। তার অনামিকায় আংটি পরিয়ে দিলেন ছেলেটি। পরস্পরকে আলিঙ্গনে জড়িয়ে দুজনে এঁকে দিলেন চুম্বন চিহ্ন। চারপাশে তখন করতালি আর উল্লাসের জোয়ার। ধারাভাষ্যকাররাও তখন খেলা ফেলে প্রেমের ধারাভাষ্য দিতে থাকলেন! বড় পর্দায় তাকিয়ে সব দেখছিলেন আরিয়ানা সাবালেঙ্কা। তার মুখে ফুটে উঠল মৃদু হাসি। তবে মনে ছিল প্রতিশোধের আগুন। চার বছর আগের একটি হিসাব যে চুকানোর ছিল!
২০২১ ইউএস ওপেনের সেমি-ফাইনালে লেইলাহ ফার্নান্দেজের কাছে অপ্রত্যাশিতভাবে সরাসরি সেটে হেরে গিয়েছিলেন সাবালেঙ্কা। এরপর আর দুজনের দেখা হয়নি। অনেক অপেক্ষার পর অবশেষে আবার মুখোমুখি হলেন দুজন। ফার্নান্দেজকে ৬-৩, ৭-৬ (২) গেমে হারিয়ে পুরোনো ক্ষতে প্রলেপ দিলেন সাবালেঙ্কা।
ম্যাচের পর কোর্টে দাঁড়িয়ে বিশ্বের এক নম্বর তারকা সরাসরিই বললেন, ‘সত্যিই এই প্রতিশোধ নিতে মুখিয়ে ছিলাম। এই জয়ে আমি খুবই খুশি।’ তাই বলে ফার্নান্দেজের প্রতি কোনো ক্ষোভ বা অসম্মান নেই সাবালেঙ্কার। তিনটি গ্র্যান্ড স্ল্যামজয়ী তারকার প্রতিজ্ঞাটা ছিল নিজের কাছেই। ‘সে অবশ্যই কঠিন এক প্রতিপক্ষ। দেখতেই পাচ্ছি, সে কঠোর পরিশ্রম করছে ও উন্নতি করছে। আজকেও দারুণ খেলেছে। প্রতি সেটে স্রেফ কয়েকটি পয়েন্ট ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দিয়েছে।’
‘(২০২১ সালের হার) আমার জন্য সেটি ছিল কঠিন এক শিক্ষা। সেটি ছিল আমাদের প্রথম দেখা, এরপর আর কখনও পরস্পরের সঙ্গে খেলা হয়নি আমার। আজকে আমি প্রমাণ করতে চেয়েছিলাম যে, ওই ম্যাচ থেকে শিক্ষা নিয়েছি ও খেলোয়াড় হিসেবে উন্নতি করেছি।’ ম্যাচের পর সংবাদ সম্মেলনে গ্যালারির ওই বিয়ের প্রস্তাবের প্রসঙ্গও এলো। সাবালেঙ্কাও বেশ মজা পেলেন তাতে। ‘আমার মনে হয়, আমার ম্যাচে প্রথমবার কেউ এমন (বিয়ের) প্রস্তাব দিল। মধুর এক মুহূর্ত ছিল সেটি। আমি চেষ্টা করছিলাম কোনোরকমে হাসি আটকে রাখতে, কারণ খুবই মিষ্টি মুহূর্ত ছিল। আশা করি, ওরা এখন দারুণ খুশি। আমি চেষ্টা করছিলাম খেলায় মনোযোগ ধরে রাখতে। দারুণ মুহূর্ত ছিল, ওদের বিয়ের জন্য শুভ কামনা।’
