ঢাকা শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

অভিমান ভেঙে ফিরলেন সুজন-তালহা

অভিমান ভেঙে ফিরলেন সুজন-তালহা

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বাদশ আসর মাঠে গড়াচ্ছে আজ। তার আগের দিন গতকাল বৃহস্পতিবার মঞ্চায়ন হলো একের পর এক নাটক। আর্থিক সংকটের অজুহাতে দলের মালিকানা ছেড়ে দিলেন চট্টগ্রাম রয়্যালসের মালিক আবদুল কাইয়ুম। দুপুর না হতেই নেতিবাচক খবরের শিরোনামে নোয়াখালী এক্সপ্রেস। নানা অব্যবস্থাপনার জন্য ক্ষোভ জানিয়ে দলীয় অনুশীলন ছেড়ে যান দুই কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন ও তালহা জুবায়ের।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে অনুশীলনে এসেছিলেন নোয়াখালী হেড কোচ সুজন ও সহকারী তালহা জুবায়ের। সিলেট মূল স্টেডিয়াম লাগোয়া আউটার স্টেডিয়ামে এদিন বেলা ২টা নাগাদ অনুশীলন শুরুর কথা ছিল নোয়াখালী এক্সপ্রেসের। সেই অনুযায়ী প্র্যাকটিস করাতে চলে আসেন হেড কোচ সুজন ও সহকারী কোচ তালহা জুবায়ের। কিন্তু তারা অনুশীলন শুরুর আগে দেখেন বল নেই। যেখানে নতুন, অর্ধেক পুরোনো ও ব্যবহৃত মিলে ২ ডজনের মত বল লাগে, সেখানে তারা কোনো নতুন বল পাননি। সাকুল্যে বল ছিল মোটে ৩টি। তা দেখে হেড কোচ খালেদ খালেদ মাহমুদ সুজন বল চান। কিন্তু তার চাহিদা মোতাবেক বল সরবরাহ করতে পারেনি নোয়াখালীর মালিক পক্ষ। দলটির মালিক পক্ষ থেকে কোচ সুজনকে নাকি বলা হয়েছে, তিনি কোচ, অত কিছু দেখার কাজ নেই তার। সেটা মালিক পক্ষ দেখবে। এ কথা শোনার পর মেজাজ বিগড়ে যায় কোচ খালেদ মাহমুদ সুজনের। তিনি রাগে ক্ষোভে প্র্যাকটিস না করে সিএনজি যোগে টিম হোটেলে ফিরে যান।

এ সময় দলের পক্ষ থেকে একজনকে বলতে শোনা যায়, ‘দেখতে খারাপ লাগছে।’ খালেদ মাহমুদ ত্বরিত জবাব দেন, ‘লাগুক আমার খারাপ লাগে না আমার খারাপ লাগে না!’ অটোরিকশায় বসেই কথা চলতে থাকে। সংবাদকর্মীদের প্রশ্নের ঝড়ও চলতে থাকে। খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘কাজ করতে ইচ্ছে করছে না, বিপিএল করব না।’ দলের পক্ষ থেকে থাকা কর্মকর্তা অটোরিকশা চালককে বলেন স্টার্ট বন্ধ করতে। কিন্তু তালহা বলেন, ‘স্টার্ট বন্ধ করবেন না, চালান।’ এক পর্যায়ে দলের ওই কর্মকর্তাকে খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘কোচ আছে, অনেক কোচ আছে, নিতে পারবে...।’ অন্য কিছু একটার জবাবে তিনি বলেন, ‘তামরা চালাও, ইমরান সাহেবকে দিয়ে চালাও।’

তবে এমন ঘটনার তিন ঘণ্টা পার না হতেই অভিমান ভেঙে আবারও দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন এই দুই কোচ। নোয়খালী মালিকের সঙ্গে বিকেলে অনুশীলনে আসেন কোচরা। পরে সুজন মুখোমুখি হয়েছেন গণমাধ্যমেরও। জানিয়েছেন, হিট অব দ্য মোমেন্টে এমনটা ঘটেছিল।

এ বিষয়ে বিসিবি পরিচালক ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান বলছেন, এ ধরনের ঘটনা মেনে নেওয়ার মতো নয়। টুর্নামেন্ট শুরুর ঠিক আগে এসব ঘটনা অগ্র্রহণযোগ্য। তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিনে নোয়াখালী দলের টিম ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটেছে। আমরা এতে বিব্রত ও লজ্জিত। মালিকপক্ষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তারা দুই কোটি টাকার পে-অর্ডারের পাশাপাশি ব্যাংক গ্যারান্টিও দিয়েছে। যদি দল পরিচালনায় ব্যর্থ হয়, আমাদের কাছে তাদের জামানত রয়েছে। প্রয়োজনে চেক ভাঙিয়ে সংশ্লিষ্ট সবাইকে অর্থ পরিশোধ করা হবে। কেন তারা বিপিএলে আসে, সেটাই এখন প্রশ্ন।’

বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব বলেন, ‘আমরা জেনেছি, ক্রিকেটারদের দৈনিক ভাতার বিষয়টি কয়েকদিন ধরে ঝুলে ছিল। এ সময় ক্রিকেটাররা নিজেদের টাকায় খাওয়া-দাওয়া করেছে। সুজন (খালেদ মাহমুদ) মাঠ ছাড়ার সময় আমার সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি তাকে বলেছি, যা মনে চায় করতে পারে। টুর্নামেন্টের প্রস্তুতির শেষ দিকে এসে বিপিএল যেভাবে একের পর একভাবে কলুষিত হচ্ছে, তা মেনে নেওয়ার মতো নয়।’ আসর শুরুর একদিন আগে অধিনায়কের নাম ঘোষণা করেছে নোয়াখালী এক্সপ্রেস। এবার নোয়াখালীর অধিনায়কত্ব করবেন সৈকত আলী। নোয়াখালী এবারই প্রথম বিপিএলে অংশ নিচ্ছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত