ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, পুরো উত্তরাকে আমরা একটি ‘গ্রিন বেল্ট’ এর আওতায় নিয়ে আসব। এই লক্ষ্য নিয়েই কমিউনিটিকে সাথে নিয়ে আমরা পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু করেছি।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর উত্তরা তৃতীয় পর্যায়ের ১৫ নম্বর সেক্টরের দিয়াবাড়ি ৫ নম্বর ব্রিজ সংলগ্ন ৪ নম্বর লেকপাড়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করে এসব কথা বলেন তিনি।
ঢাকার পরিবেশ রক্ষা ও বায়ুদূষণ হ্রাসে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) চলতি বর্ষা মৌসুমে ৫ লাখ গাছ রোপণের একটি বৃহৎ বনায়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। নগরবাসীর জন্য বাসযোগ্য ও সবুজ ঢাকা গড়ে তুলতে তিন মাসব্যাপী এই কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে।
এরই অংশ হিসেবে বুধবার উত্তরা তৃতীয় পর্যায়ের ১৫ নম্বর সেক্টরের দিয়াবাড়ি ৫ নম্বর ব্রিজ সংলগ্ন ৪ নম্বর লেকপাড়ে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির শুভ উদ্বোধন করা হয়। বেসরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের অর্থায়ন এবং পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন সেভারস-এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠানে ৫০০টি দেশীয় প্রজাতির চারা রোপণ করা হয়।
ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ প্রধান অতিথি হিসেবে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, শুধু সরকারি উদ্যোগ যথেষ্ট নয়—কমিউনিটির সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আমরা নাগরিকদের সম্পৃক্ত করছি যাতে একটি কমিউনিটি ওউনারশিপ তৈরি হয়। এই লক্ষ্য নিয়েই আজকের এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন।
তিনি আরো বলেন, “ঢাকার পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা, বায়ুদূষণ হ্রাস এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যে এই বর্ষায় ৫ লাখ গাছ রোপণের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। সড়ক বিভাজক, পার্ক, খেলার মাঠ, খালপাড়, কবরস্থান ও নিম্ন আয়ের মানুষের বসবাসকারী এলাকায় এই গাছগুলো রোপণ করা হবে।”
এসময় তিনি আরও জানান, “ঢাকার ভেতরে এক সময় ৫টি নদী প্রবাহিত হতো। এর মধ্যে কনাই নদীর একটি শাখা ছিল খিদির খাল। বর্তমানে খিদির খালকে টঙ্গী খালের সাথে যুক্ত করে পুনরায় প্রবাহিত করা হয়েছে। এই ধরনের প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা শহরের প্রাকৃতিক জলধারা ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি।”
মোহাম্মদ এজাজ আরো বলেন “মানুষ বলে শহরে গাছ লাগানোর জায়গা নেই। অথচ আমরা যদি ঢাকার বিভিন্ন ওয়াটার বডির (জলাশয়, খাল, নদী) পাশেই পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগাই, তাহলে খাল ও নদীর দুই পাশ মিলে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বৃক্ষরোপণ করা সম্ভব। এতে বায়োডাইভারসিটি রক্ষা পাবে এবং শহর হবে জলবায়ু সহনশীল বা ক্লাইমেট রেজিলিয়েন্ট।”
অনুষ্ঠানে আইডিএলসি’র লার্নিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও সিএসআর বিভাগের প্রধান ফারহানা শারমিন, গ্রিন সেভারস-এর প্রধান নির্বাহী আহসান রনি এবং ডিএনসিসি, আইডিএলসি ও গ্রিন সেভারস-এর অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ ও সময়োপযোগী এই পরিবেশ উদ্যোগে অংশীদার হওয়ার জন্য প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ আইডিএলসি এবং গ্রিন সেভারস-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
রোপিত চারাগুলোর মধ্যে রয়েছে— হিজল, বট, কদম, কৃষ্ণচূড়া, ডুমুর, ছাতিম, জাম, জামরুল, নিম ও অর্জুন— যা নদী ও খালপাড়ে রোপণের জন্য উপযোগী। গাছগুলোর পরবর্তী পরিচর্যার দায়িত্ব পালন করবে গ্রিন সেভারস।
নগরবাসীর সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে একটি টেকসই মডেল হয়ে উঠবে বলে আশা প্রকাশ করেন বক্তারা।