চলতি আমন মৌসুমে কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলায় সরকার নির্ধারিত দামে ধান সংগ্রহে চরম সংকট দেখা দিয়েছে। বাজারে ধানের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা সরকারি গুদামে ধান দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। ফলে এখন পর্যন্ত এক ছটাক ধানও কিনতে পারেনি উপজেলা খাদ্য অফিস।
সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বাজারদর বেশি হওয়ায় কৃষকরা সরকারি গুদামের বদলে স্থানীয় বাজারেই ধান বিক্রি করছেন। সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী, প্রতি মণ ধান ১,৩২০ টাকায় ক্রয়ের কথা থাকলেও বর্তমানে খোলা বাজারে চিকন ধান ১,৫০০ টাকা এবং মোটা ধান ১,৪০০ থেকে ১,৪৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ফলে কৃষকদের গুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ নেই।
উপজেলা খাদ্য গুদাম সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ৫৩৮ মেট্রিক টন ধান এবং ১৮৩ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে এ পর্যন্ত চাল সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৯০ মেট্রিক টন, আর ধান সংগ্রহ হয়নি একদানাও। গত আড়াই মাসে গুদামে ধান না ওঠায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
সরকার নির্ধারিত প্রতি কেজি চালের দাম ৪৭ টাকা থাকলেও উৎপাদন খরচ পড়ে ৫০-৫২ টাকা। এতে প্রতিকেজিতে ৬-৭ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে মিলারদের। ফলে মিলাররাও সরকারকে চাল সরবরাহে আগ্রহী নন। উপজেলার চারজন তালিকাভুক্ত মিলারের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ করেও কার্যকর কোনো সমাধান মিলছে না বলে জানিয়েছেন তাড়াইল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাসুদ আলম ফরহাদ।
স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, সরকার নির্ধারিত মূল্য বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। তারা ধান-চালের দাম পুনর্নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন। অন্যদিকে, খাদ্য বিভাগ বাজারমূল্যের তুলনায় সরকারের নির্ধারিত দামের পার্থক্যের কারণে ধান-চাল সংগ্রহে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে।
গত ১৭ নভেম্বর চলতি আমন মৌসুমের কার্যক্রম শুরু হয়, যা শেষ হবে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব কি না, তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।