রাজবাড়ীর গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ ধাওয়াপাড়া-নাজিরগঞ্জ রুটের নৌ চ্যানেল প্রশস্তকরণের জন্য পদ্মা নদী থেকে উত্তোলন করা ভরাট বালু (খননকৃত বর্জ্য) অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগে মোবাইল কোর্টের অভিযান চালানো হয়েছে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টার দিকে এ অভিযান পরিচালনা করেন রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মারিয়া হক। অভিযানে দায়ী প্রতিষ্ঠান মাহিন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল মালেক শিকদারকে বালুমহাল ব্যবস্থাপনা আইনে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়।
বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারী প্রকৌশলী মো. এখলাছ উদ্দিন জানান, দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে উত্তরাঞ্চলের নৌযোগাযোগ স্বাভাবিক রাখতে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসের শেষ দিকে ধাওয়াপাড়া ফেরিঘাট এলাকায় ড্রেজিং কাজ শুরু করা হয়। বাংলাদেশ নৌবাহিনীর ২টি ড্রেজার এই কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে এ পর্যন্ত ২০ লক্ষ ঘনফুট পলি অপসারণ করা হয়েছে, যা স্থানীয়ভাবে একটি বেডে সংরক্ষণ করা হয়। তবে অভিযোগ রয়েছে, এই খননকৃত বালু অবৈধভাবে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে মাহিন এন্টারপ্রাইজ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্থানীয় ব্যবসায়ী ফজলুল হক এর তত্ত্বাবধানে খাস জমিতে তৈরি করা বিশাল বেডে খননকৃত বালু রাখা হচ্ছে। ফজলুল হকের দাবি, জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তারা এই কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
অন্যদিকে, বালু শ্রমিক আরিফ জানান, ২শ’ ফুট বালু ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অর্থাৎ প্রতি ঘনফুট বালুর মূল্য ৫ টাকা। এভাবে প্রায় ১ কোটি টাকার বালু বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করা হয়েছে।
রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখা সূত্রে জানা যায়, ড্রেজড ম্যাটেরিয়াল ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাহিন এন্টারপ্রাইজকে শুধুমাত্র সরকারি, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিনামূল্যে বালি সরবরাহের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল।
আরডিসি মো. পলাশ উদ্দিন বলেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান শুধুমাত্র সরকারি/সামাজিক কাজে বিনামূল্যে বালু সরবরাহ করতে পারবে। বাণিজ্যিকভাবে বিক্রি করার কোনো অনুমতি নেই।
অভিযান শেষে ইউএনও মারিয়া হক জানান, বিনামূল্যের খননকৃত বালু অবৈধভাবে বিক্রির অভিযোগে অভিযান চালিয়ে আব্দুল মালেক শিকদারকে দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।