ঢাকা সোমবার, ২৬ মে ২০২৫, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

৪৫০ টাকার জন্য ভ্যানচালককে গলা কে'টে হ'ত্যা

৪৫০ টাকার জন্য ভ্যানচালককে গলা কে'টে হ'ত্যা

মাদারীপুরের শিবচরে ভ্যান ভাড়া বাবদ পাওনা ৪৫০ টাকা চাওয়ার কারণে ভ্যান চালক মিজানুর রহমান গাজীকে পরিকল্পিতভাবে ভুট্টা ক্ষেতে নিয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। আদালত ও পুলিশের কাছে এমনই চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়েছে এ ঘটনায় গ্রেফতারকৃত তিন আসামি।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাতে প্রেস কনফারেন্সে সহকারী পুলিশ সুপার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

পুলিশ জানায়, জেলার শিবচর পৌরসভার কেরানীর বাট এলাকার নবীনূর বেপারীর ছেলে আরিয়ান আহমেদ স্বাধীনের কাছে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের মালামাল পরিবহনের ভাড়া ৪৫০ টাকা পেতো উমেদপুর ইউনিয়নের চরকাচিকাটা গ্রামের লাভলু গাজীর ছেলে ভ্যান চালক মিজানুর রহমান গাজী। পাওনা সেই টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে প্রায়ই মিজানুরের সাথে স্বাধীনের কথা কাটাকাটি হতো। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মিজানুরকে শিক্ষা দেয়ার পরিকল্পনা করে স্বাধীন। এরই প্রেক্ষিতে গত ৬ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার স্বাধীন তার বন্ধু দ্বিতীয়খন্ড ইউনিয়নের শিকদারকান্দি গ্রামের হুমায়ুন শিকদারের ছেলে হান্নানকে দিয়ে কেরানীর বাট বেইলি ব্রিজ সংলগ্ন মিজানুরের ভাড়া বাসা থেকে মিজানুরকে পাঁচ্চর যাওয়ার কথা বলে ৫শ টাকায় ভাড়া করে। হান্নান ভ্যানসহ মিজানুরকে কৌশলে কাদিরপুর ইউনিয়নের পবন মোড়লের চর কান্দি গ্রামের একটি ভুট্টা ক্ষেতের পাশে নিয়ে যায়। মিজানুরকে সেখানে নিয়ে যাওয়ার পর আগে থেকেই অপেক্ষা করা স্বাধীন ধারালো ছুরি দিয়ে মিজানুরের গলায় আঘাত করে। আল আমিন ও হান্নানও ধারালো ছুরি দিয়ে শরীরের অন্যান্য স্থানে আঘাত করে। এতেই মৃত্যু হয় ভ্যান চালক মিজানুরের। পরে খুনি ৩ জন মিজানুরের ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরদিন ৭ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ভুট্টা ক্ষেতে মিজানুরের লাশ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।

এসময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ধারালো একটি ছুরি, নেশা গ্রহণের সরঞ্জাম ও আসামিদের পরিহিত একটি লাল রঙের জ্যাকেট উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের মা বাদী হয়ে আরিয়ান আহমেদ স্বাধীন ও আল আমিনের নামসহ অজ্ঞাতনামা একজনকে আসামিকে করে শিবচর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

এ হত্যার রহস্য উন্মোচনে নেমে প্রথমেই আরিয়ান আহমেদ স্বাধীন ও আল আমিনকে হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে শিবচর থেকে কাঠালবাড়ি পর্যন্ত এলাকার অন্তত ৫০টি স্থানের সিসি ক্যামেরার ভিডিও সংগ্রহ করে তা পর্যালোচনা করে। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ হান্নানকে রবিবার রাতে গ্রেফতার করে সোমবার বিকেলে মাদারীপুর জেলহাজতে প্রেরণ করে। আটককৃত আসামীরা আদালত ও পুলিশের কাছে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।

গ্রেফতারকৃত হান্নান বলেন, স্বাধীনের কাছে মিজানুর ভ্যান ভাড়া বাবদ ৪৫০ টাকা পেতো। সেই টাকা নিয়ে স্বাধীনের সাথে মিজানুরের কয়েকবার কথা কাটাকাটি হয়। মিজানুর স্বাধীনের সাথে বেয়াদবি করে। তাই স্বাধীন মিজানুরকে পেটানোর কথা বলে আমাকে দিয়ে মিজানুরকে ভুট্টা ক্ষেতের কাছে নিয়ে যায়। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর স্বাধীন ধারালো ছুরি দিয়ে মিজানুরের গলায় আঘাত করে। পরে আমিও ছুরি দিয়ে মিজানুরের শরীরে আঘাত করি। এক পর্যায়ে মিজানুর মারা যায়। পরে আমরা ভ্যানটি নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করি।

সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) মো: আজমীর হোসেন বলেন, আসামীরা আমাদের কাছে এবং আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মূলত ভ্যান ভাড়ার ৪৫০ টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করেই গ্রেফতারকৃতরা মিজানুরকে হত্যা করে এবং ভ্যানটি নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে। আমরা ভ্যানটি উদ্ধারে কাজ করছি।

হত্যা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত