ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫, ১২ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত

আশুলিয়ার নলাম এলাকায় অবস্থিত গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘ ১১ বছর পর এই সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হলো। ২০১৪ সালের পর নানা জটিলতার কারণে বিগত ১১বছর সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়নি।

সোমবার (২৪ফেব্রুয়ারী ) সকাল ১০টা থেকে সমাবর্তনের মূল আয়োজন শুরু হয়ে চলে দুপুর ১টা পর্যন্ত। পরে বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাবর্তনের পর্দা নামবে।

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪র্থ সমাবর্তনে সভাপতির বক্তব্যে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, জালিয়াতি ও প্রতারণার নির্বাচন, বিরোধী মত দমন, সীমাহীন দুর্নীতি, রাষ্ট্রের মৌলিক কাঠামো এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান সমূহকে ধ্বংস, মাত্রাতিরিক্ত পুলিশ ও আমলা নির্ভরতার কারণে ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের পতন হয়েছে। উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ আরো বলেন, জুলাই বিপ্লবের পর সমগ্র জাতি আজ স্বপ্ন দেখছে শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ গড়ার, যে দায়িত্ব শিক্ষার্থীদেরকেই নিতে হবে।

এছাড়াও তিনি আরো বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষা ব্যবস্থা সামগ্রিকভাবেই একটা নাজুক অবস্থা অতিক্রম করছে। রাজনৈতিক দলাদলি, পারস্পরিক সহনশীলতার অভাব, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির অপসংস্কৃতি ও অপতৎপরতা পরিস্থিতিকে আরো ভয়াবহ করে তুলেছে। এসব পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য নির্বাচিত ছাত্র সংসদ দ্বারা ছাত্রদের নেতৃত্ব বিকাশের উদ্যোগ নেয়া জরুরী। অনিয়মিত হলেও গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের নেতৃত্ব বিকাশের সেই সুযোগ দিয়েছে, যা দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণ বিশ্ববিদ্যালয়কে অনন্য করেছে।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন দূরদর্শী এবং স্বপ্নদ্রষ্টা। যেখানেই ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্পর্শ পেয়েছে সেখানেই নতুনের জন্ম হয়েছে। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ডিগ্রিপ্রাপ্তরা দেশ সমাজ ও রাষ্ট্রের সংস্কারে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন বলেও আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

এসময় সমাবর্তন বক্তা গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও গণ বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য এবং গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডাঃ আবুল কাসেম চৌধুরী বলেন, দেশের বর্তমান অবস্থা দেখেই বুঝা যাচ্ছে আমরা কোথায় আছি। আমরা ভালো মানুষ হতে পারিনি। ভালো মানুষ তৈরি করার জন্যই আমাদের এই গণ বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৭২ সালে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী তাঁর সহকর্মীদের নিয়ে এদেশে স্বাস্থ্য সেবা উন্নয়নের জন্য একটি বীজ বপন করেছিলেন। সেই বীজ থেকে শাখা-প্রশাখাসহ বিরাট এক বৃক্ষে পরিণত হয়েছে- গণ বিশ্ববিদ্যালয়, গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ, গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালস, গণপ্রকাশনী, গণমুদ্রণ, নারীকেন্দ্র ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহ।

এবারের সমাবর্তনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. তানজিমউদ্দীন খান।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আবুল হোসেন গ্রাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে বলেন, আনুষ্ঠানিক শিক্ষা জীবন শেষ হলেও, এই শেষ থেকেই আপনাদের নতুন জীবন শুরু হবে। শিক্ষা জীবনে অর্জিত জ্ঞান এখন বাস্তব কর্মক্ষেত্রে কাজে লাগাতে হবে। যদিও শিক্ষা, অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান অর্জনের কোন নির্দিষ্ট সীমারেখা নেই, তাই জীবনভর তা অর্জনের মাধ্যমে আরো বড় সাফল্য অর্জন করতে হবে।

সমাবর্তন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গণ বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ওয়ালিউল ইসলাম এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক মোঃ সিরাজুল ইসলাম। গণ বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ড সিন্ডিকেট ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, বিভিন্ন অনুষদের ডিন ও শিক্ষকগণ এসময় উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য,এবারের সমাবর্তনে ৭৭২৭জন গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রিপ্রাপ্ত হন এবং ২৪৭৮ জন রেজিস্ট্রার্ড গ্র্যাজুয়েট সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করেন। বহু বছর পরে হলেও সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করতে পেরে সবাই খুব আনন্দিত বলে জানায় তারা।

গণ বিশ্ববিদ্যালয়,সমাবর্তন
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত