ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চৌদ্দগ্রামে সয়াবিনে কারসাজি, নেই তদারকি

চৌদ্দগ্রামে সয়াবিনে কারসাজি, নেই তদারকি

রমজানের আগে চৌদ্দগ্রামের বাজারে সয়াবিন তেলের সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। বাজারের বেশিরভাগ দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল মিলছে না। খোলা তেল মিললেও তা বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। খুচরা বিক্রেতারা এই সংকটের জন্য পাইকারি ডিলারদের দায়ী করছেন, আর ডিলাররা দোষ দিচ্ছেন কোম্পানির সরবরাহ ঘাটতিকে।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, পৌরসভার গোমারবাড়ি এলাকার ক্রেতা মো. জামাল একাধিক দোকান ঘুরেও পাননি ৫ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল। কিছু দোকানে ১ বা ২ লিটারের বোতল থাকলেও, দাম হাঁকা হচ্ছে মোড়কে লেখা দামের চেয়েও বেশি। নিরুপায় হয়ে তিনি ৯৫০ মিলির একটি বোতল ২০০ টাকায় কিনতে বাধ্য হন।

এক খুচরা বিক্রেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, চাহিদা অনুযায়ী ডিলাররা তেল সরবরাহ করছেন না। কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিরাও ফোন ধরেন না। তেল নিতে গেলে ডিলাররা জোর করে তেলের সঙ্গে লবণ, ময়দা, আটা ও চালের মতো পণ্য কিনতে বাধ্য করেন। এতে ক্ষুব্ধ দোকানিরা সয়াবিন বিক্রি করতে আগ্রহ হারাচ্ছেন।

শফিক নামের এক ক্রেতা বলেন, নির্দিষ্ট কয়েকটি দোকানে বেশি দামে ছোট বোতলের তেল মিললেও ৫ লিটারের বোতল পাওয়া যাচ্ছে না। খোলা সুপার তেলের দাম নেওয়া হচ্ছে প্রতি লিটার ১৮০ টাকা। তার ওপর তেলের সঙ্গে চাল, আটা ও মশলা কেনার চাপ দিচ্ছে দোকানিরা। বাজারে নিয়মিত তদারকি না থাকায় প্রশাসনের ভূমিকায় হতাশা প্রকাশ করেন তিনি।

চৌদ্দগ্রাম ও মুন্সিরহাটের বড় বাজারগুলো ঘুরে দেখা যায়, ৫ লিটারের বোতলজাত তেল নেই বললেই চলে। বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, ডিলার ও পাইকাররা মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন এবং সেখান থেকে বাড়তি মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছেন।

ফ্রেশ ব্র্যান্ডের ডিলার পরিচয় ট্রেডার্সের মালিক রোমেল বলেন, কোম্পানি থেকেই চাহিদা অনুযায়ী তেল দিচ্ছে না। আবার তেল নেওয়ার শর্ত হিসেবে অন্যান্য পণ্য নিতে বাধ্য করছে কোম্পানি। তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

তীর ব্র্যান্ডের ডিলার বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের মালিক রিংকু অবশ্য এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি জানান, গত শুক্রবারই ১৫০ কার্টুন ক্যানোলা ও ১২০ কার্টুন সাধারণ সয়াবিন সরবরাহ করেছেন, প্রতি ৫ লিটারের দাম ৯২৫ টাকা। তবে তিনি মানেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম।

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জামাল হোসেন বলেন, "বাজারে তেল সংকটের বিষয়ে আমরা অবগত। সরবরাহ সমস্যা বলে জানানো হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"

কুমিল্লা জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. কাউছার মিয়া বলেন, "রমজানে তেলের চাহিদা বাড়ে, এজন্য আমরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিলে বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি, যাতে রমজানে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকে।"

সয়াবিন,কারসাজি
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত