মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আলু পরিবহণের নিয়ন্ত্রণ ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, গোলাগুলি ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৭ মার্চ) রাত ১২টার দিকে উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের করিমখাঁ গ্রামে ভাটিচকে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষের সময় প্রায় ২০ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয় এবং আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ৫-৬টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে কেউ হতাহত না হলেও এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষের পর থেকে আলু পরিবহণের কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করিমখাঁ গ্রামের আব্দুল মালেকের ছেলে রমজান গ্রুপের সঙ্গে হোগলাকান্দির লালু-সৈকত গ্রুপের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। রাজনৈতিক কারণে রমজান দীর্ঘদিন এলাকা থেকে বাইরে ছিলেন। সম্প্রতি ফিরে এসে তিনি ট্রাক্টরে আলু পরিবহণের কাজে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা কৃষক আব্দুল আলী জানান, "এই এলাকায় আলু পরিবহণের কাজ দীর্ঘদিন ধরে একটি পক্ষ একচ্ছত্রভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে। ফলে কৃষকদের নির্ধারিত বাজারমূল্যের চেয়ে প্রতি বস্তায় ১৫ টাকা বেশি গুনতে হয়। আলু পরিবহণের ওপর কর্তৃত্ব নিয়ে দ্বন্দ্ব থেকেই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।"
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে হোগলাকান্দি গ্রাম সংলগ্ন ভাটি চকে কৃষকদের জমি থেকে লালু-সৈকত গ্রুপের লোকজন ট্রাক্টরে আলু লোড করছিলেন। এ সময় রমজান গ্রুপ বাধা দেয় এবং আতঙ্ক সৃষ্টি করতে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় গোলাগুলি চলে, যা রাত ১২টা পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
সংঘর্ষের কারণে আলু পরিবহণ বন্ধ থাকায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা।
কৃষক মোকাররম হোসেন বলেন, "ভয়ে কেউ ট্রাক্টর নিয়ে আলু পরিবহণ করতে আসছে না। ফলে আমাদের উত্তোলিত আলুগুলো জমিতে পড়ে থাকছে। দ্রুত সমস্যা সমাধান না হলে কৃষকরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।"
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, "আমরা সকালে ঘটনার খবর পেয়েছি। দোষীদের ধরতে অভিযান চলছে। পাশাপাশি কৃষকরা যাতে নির্বিঘ্নে আলু পরিবহণ করতে পারে, সেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।"