অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার দুদকের রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. হুসাইন শরিফের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল এই অভিযান পরিচালনা করে।
দুদকের সহকারী পরিচালক মো. হুসাইন শরিফ জানান, ২০০৯ সালে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. জলিল মিয়ার উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এই ইনস্টিটিউটটির কার্যক্রমের সুনির্দিষ্ট অনুমোদন ও নীতিমালা নেই। প্রতিষ্ঠার পর কয়েকজন গবেষণা কর্মকর্তা ও ফেলো নিয়োগ দেওয়া হলেও নীতিমালা না থাকায় তারা ডিগ্রি সম্পন্ন করতে পারেননি। বর্তমানে ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কোনো কার্যক্রম ছাড়াই বেতন-ভাতা নিচ্ছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পাওয়া গেছে। বিষয়টি কমিশনে প্রতিবেদন আকারে পাঠানো হবে, সেখান থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট অনুযায়ী, ইনস্টিটিউটে সাতজন কর্মকর্তা, একজন কম্পিউটার অপারেটর ও একজন এমএলএসএস কর্মরত আছেন। কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার খন্দকার গোলাম মোস্তফা, প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ড. প্রসন্নজিৎ সরকার, সাবেক উপাচার্য আবদুল জলিলের মেয়ে রুমানা ফেরদৌসী জলীল, ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রফিউল আজম খানের স্ত্রী ডেপুটি রেজিস্ট্রার সিরাজুম মুনিরা, সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার আবু সায়েম, সিনিয়র রিসার্চ অফিসার মেহজাবিন ইলাহী এবং রিসার্চ অফিসার ড. মো. রোকনুজ্জামান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে তাদের গবেষণা কার্যক্রম সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। গবেষণা বিষয়ক আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম ‘রিসার্চগেট’-এ কেবলমাত্র ড. প্রসন্নজিৎ সরকার ও সিনিয়র সায়েন্টিফিক অফিসার আবু সায়েমের দুই-তিনটি গবেষণাপত্র পাওয়া গেছে। বাকিদের কোনো গবেষণার তথ্য নেই।
এ প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. শওকাত আলী বলেন, "আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর জানতে পারি, এই ইনস্টিটিউটের পরিচালক আমি নিজেই। তখন বিষয়টি খতিয়ে দেখি এবং জানতে পারি, ইনস্টিটিউটের কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন ২০২৪ সালের মে মাসে দেওয়া হলেও এখনো কোনো নীতিমালা তৈরি হয়নি। আমি ব্যক্তিগত উদ্যোগে নীতিমালা তৈরির কাজ করছি।"