কুড়িগ্রাম জেলার ২০ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য সেবার জন্য একমাত্র ভরসাস্থল আড়াই শ' শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালটিতে রাজস্ব খাতের বেতনভুক্ত কোন পরিচ্ছন্নতাকর্মী (সুইপার) নেই। পরিষ্কার-পরিচ্ছনতার অভাবে হাসপাতালটি যেন নিজেই রোগী বনে গেছে।
সংশ্লিষ্ট নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়- হাসপাতালটিতে মোট পরিচ্ছন্নতাকর্মীর (সুইপার) পদ রয়েছে ৭টি। তার মধ্যে মাত্র ৩ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মী (সুইপার) থাকলেও তারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করেন না। এদের মধ্যে মো. ইউনুস আলী খন্দকার নামের পরিচ্ছন্নতাকর্মী (সুইপার) গত ৮ মাস পূর্বে প্রেষণে রংপুর বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য)-এর কার্যালয়ে চলে যায়। মো. মোকাদেস রহমান নামের পরিচ্ছন্নতাকর্মী (সুইপার)-এর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা থাকায় সে ১ বছর আগে সাময়িক বরখাস্ত হয়েছে। অপরজন আব্দুল মান্নান নামের পরিচ্ছন্নতাকর্মী (সুইপার) হাসপাতালে থাকলেও সে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করে না। সে আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও)-এর কার্যালয়ে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত রয়েছে। ফলে কার্যত হাসপাতালটিতে রাজস্ব খাতের বেতনভুক্ত কোন পরিচ্ছন্নতাকর্মী (সুইপার) নেই। এমতাবস্থায় জোড়াতালি দিয়ে হাসপাতালটিতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে।
অতি সম্প্রতি কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবার মান বাড়ানো লক্ষ্যে কুড়িগ্রাম জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে অনশন, মানববন্ধন, রোগীদের মাঝে ইফতার বিতরণসহ বেশ কিছু কর্মসূচি পালন করা হয়।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ নাহিদ বলেন, সুইপারকে দিয়ে ব্যক্তিগত কাজ করিয়ে নেয়ার বিষয়টি নিন্দনীয়। আমি এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যার যে কাজ তাকে সেই কাজ করতে হবে। তাহলে সাধারণ মানুষ সঠিক স্বাস্থ্য সেবা পাবে। হাসপাতালের জনবল সংকট কাটিয়ে উঠার জন্য আমরা বিভিন্নভাবে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। খেয়াল রাখতে হবে আমাদের যা আছে তাই দিয়ে যেন মানুষকে ভালো সেবা দিতে পারি।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. মো. শাহিনুর রহমান সরদারের সাথে কথা হলে তিনি বর্তমান সদর হাসপাতালে রাজস্ব খাতের বেতনভুক্ত পরিচ্ছন্নতাকর্মী (সুইপার) শূন্য থাকার বিষয়টি অকপটে স্বীকার করে বলেন- আমি দায়িত্ব নেয়ার পর দেখেছি পরিচ্ছন্নতাকর্মী (সুইপার) আব্দুল মান্নান আরএমও অফিসে অফিস সহায়ক পদে কাজ করছিল। এখনও সে আমার অফিসে একই কাজ করে আসছে। তবে সে তার নিজের টাকা দিয়ে একজন পেশাদার সুইপারকে দিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চালিয়ে নেয়।
তিনি আরও বলেন- তত্ত্বাবধায়ক স্যার আনঅফিসিয়ালি কয়েকজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী রেখেছেন। আর গত জুন মাস থেকে আউট সোর্সিংয়ে কর্মরত পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের (সুইপার) মেয়াদ শেষ হওয়ার দরুন পরিস্থিতি আরো বেশী জটিল হয়ে পড়েছে।
একই প্রসঙ্গে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. শহিদুল্লাহ এবং রংপুর বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. মো. হারুন-অর-রশীদের সাথে অফিস সময়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি।