চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর উপজেলায় এ বছর তিল চাষ কৃষক পরিবারের কাছে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার খুলেছে। এ বছর তিল চাষে বাম্পার ফলনে সোনালি সম্ভাবনা বিরাজ করছে। তিল চাষে উৎপাদন খরচ কম, কম পরিশ্রম, আর বাজারে তিলের তেলের ভালো দাম পাওয়া যাওয়ায় তিল চাষের প্রতি কৃষক পরিবার গুলোর আগ্রহ বেড়েছে বহুগুণ। নিত্যদিন ব্যবহারে ভোজ্যতেল হিসেবে তিলের তেলের চাহিদা বাড়ায়, চাষিরা এই ফসলকেই দেখছেন আয়ের নতুন উৎস হিসেবে।
বুধবার (১৪ মে) এ উপজেলার ষাটনল, বাগানবাড়ী ও জহিরাবাদ ইউনিয়নের মাঠঘাট ঘুরে দেখা যায়, অনেক কৃষক আমন ধান কাটার পর জমিতে তিলের চাষ করছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কৃষকরা এবার বাম্পার ফলনের প্রত্যাশায় রয়েছেন।
উপজেলার ষাটনল গ্রামের চাষি শাহীন আলম বলেন, গত তিন বছর ধরে আমি তিল চাষ করে আসছি। এবার দুই বিঘা জমিতে হিতল চাষ করেছি। রাসায়নিক সার, কীটনাশক বা সেচ লাগে না। প্রতি বিঘা থেকে ৬-৭ মণ ফলন পাওয়া যায়, এতে আয় হয় ১২-১৩ হাজার টাকা। তিল চাষে ঝামেলা কম, কিন্তু লাভ অনেক বেশি।”
অন্যদিকে, জহিরাবাদ ইউনিয়নের কৃষক সাইফুল ইসলাম বলেন, আগে তিল চাষ করতাম না। আমাদের কৃষক আলমগীরকে তিল চাষ করতে দেখে উৎসাহ পেয়েছি। এবার প্রথমবার এক বিঘা জমিতে চাষ করেছি। এখন দেখছি, এই ফসলে খরচ কম, জমিও খালি পড়ে থাকে না। ফলনও আশানুরূপ অনেক ভাল হচ্ছে।”
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে মতলব উত্তরে ২৩ হেক্টর জমিতে তিলের আবাদ করেছে এখানকার কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বীজ সহায়তা দেওয়া হয়েছে ২৮০ জন কৃষক পরিবারকে। কৃষি কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে কৃষকদের উৎসাহ দিচ্ছেন এবং কারিগরি সহায়তা প্রদান করে যাচ্ছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফয়সাল মোহাম্মদ আলী বলেন, তিল একটি লাভজনক এবং পরিবেশবান্ধব ফসল। কম খরচে তিল চাষে উৎপাদন সম্ভব হওয়ায় কৃষকরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তিলের তেল অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত, যার বাজার চাহিদা নিত্য দিনই বাড়ছে। আমরা চাই তিল হোক মতলব উত্তরের কৃষকদের আর্থিক মুক্তির একটি বড় ধরনের পথ।
তিনি আরও বলেন, তিল চাষে যদি বাজার ব্যবস্থাপনা সহজ করা যায়, তাহলে এটি হতে পারে এ অঞ্চলের কৃষকদের কৃষির জন্য একটি নতুন শথ চলার বড় উপায় বা অবলম্বন।