ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর ও সরাইল উপজেলায় নাসিরনগর উপজেলায় তুচ্ছ ঘটনায় পৃথক সংঘর্ষে উভয়পক্ষের নারীও শিশুসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১০ জুন) সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে জমি থেকে শসা খাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৮০ জন আহত হয়েছে। উপজেলার বুড়িশ্বর ইউনিয়নের শ্রীঘর গ্রামের দক্ষিণ পাড়ায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিজের বাড়ির পাশে শসা চাষ করেছেন সরকার বাড়ির জুয়েল মিয়া। সেই শসা গত কয়েকদিন ধরে রাতের বেলায় কারা যেন চুরি করে নিয়ে খেয়ে ফেলে। পরে জানা যায় বড় হাটি বাড়ির জালালের ছেলে হৃদয়সহ ৫/৬জন যুবক এ কাজ করেছে। বিষয়টি নিয়ে বিচার সালিশ চাওয়া হয় বড় হাটি সমাজের কাছে। কিন্তু বড় হাটি সমাজ এর বিচার দিতে নারাজ। এর জের ধরে গতকাল সকালে বড় হাটি বাড়ির লোকজন টেঁটা, বল্লমসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় সরকার বাড়ির উপর। যা পরে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে এবং দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্রসহ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে দুই পক্ষ। ৪ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ৮০জন লোক আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকেই চিকিৎসা নিয়েছেন মাসুক মিয়া, আমিন মিয়া, লদন মিয়া, সারোয়ার, জান আলম, রজব আলী, সাকিব, ফুল জাহান, কাদির, এমরান, ছাদেক, বিং রাজ বেগম, হাসান, ছালেক, হাফিজ, নজরুল, ইমন, আজাদ ও আজিজসহ অনেকে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খাইরুল আলম বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উভয় পক্ষের ৫/৬ জনকে থানায় আনা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
এদিকে গত সোমবার রাতে সরাইল উপজেলার সদরে পাঠানপাড়া মোড়ে একটি রেস্টুরেন্টে টিস্যু চাওয়াকে কেন্দ্র করে দুই দল গ্রামবাসীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের সময় প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী সরাইল-লাখাই আঞ্চলিক সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। সংঘর্ষে অন্তত ২০জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয়রা জানায়, সরাইলের সরাইল-লাখাই সড়কের পাঠানপাড়া মোড়ে বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠেছে। সেখানে এরাবিয়ান ফুচকা হাউস নামে একটি প্রতিষ্ঠানে কুট্টাপাড়া এলাকার রাব্বি নামের এক যুবক খাবারের পর টিস্যু পেপার চান। তখন রেস্টুরেন্টে স্টাফ জানান টিস্যুপেপার শেষ হয়ে গেছে। এনিয়ে তাদের মাঝে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে রেস্টুরেন্টের মালিক মুজিবুর রহমানের সাথে রাব্বির বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতি হয়। এর জের ধরে কুট্টাপাড়া ও পাঠানপাড়া দুই গ্রামের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। রাতের আঁধারে তারা টর্চ লাইটের আলো সহ বিভিন্ন আলো জ্বালিয়ে সংঘর্ষ চালিয়ে যায়। এসময় উভয়পক্ষের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপে অন্তত ২০ জন আহত হন।
এসময় সরাইল-লাখাই আঞ্চলিক সড়ক রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত দুই ঘন্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল হাসান জানান, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে এই ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ করেনি। কাউকে আটক করা যায়নি।