ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সিরাজগঞ্জে আধুনিক প্রযুক্তিতে মালচিং পেপারে টিয়া করোলা চাষে কৃষক দম্পত্তির স্বচ্ছলতা

সিরাজগঞ্জে আধুনিক প্রযুক্তিতে  মালচিং পেপারে টিয়া করোলা  চাষে কৃষক দম্পত্তির স্বচ্ছলতা

সিরাজগঞ্জের অনেক কৃষক বিভিন্ন সবজি চাষে স্বচ্ছলতা ফিরে এসেছে। আর মালচিং পেপারে টিয়া জাতের করোলা বাগান চাষে সাফল্যে প্রান্তিক কৃষক রেজাউল করিম দম্পত্তির ফিরে এসেছে স্বচ্ছলতা। আধুনিক প্রযুক্তিক্তে এ লাভজনক চাষে ঝুঁকে পড়েছে কৃষকেরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার সাটিকাবাড়ি গ্রামের প্রান্তিক কৃষক রেজাউল এলাকার প্রভাবশালী এক কৃষকের জমি র্বগা নেয় এবং এ জমিতে সবজি চাষ করে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিল। তার ৩ মেয়ে ১ ছেলেসহ ৬ জনের সংসারে টানাপোড়েন লেগেই থাকতো। এ নিয়ে তার পরিবারে মাঝে মধ্যেই অশান্তির সৃষ্টি হচ্ছিল। পরের জমিতে সবজি চাষ করে তেমন লাভবান হয়নি। অবশেষে স্বামী স্ত্রী আদর্শ কৃষক হতে নানা পথ অবলম্বন করে এবং তারা নানা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকে। এমতাবস্থায় তার স্ত্রী কোহিনুর এনডিপি মাইক্রো ক্রেডিটের সদস্য হয় এবং পিকেএসএফ এর আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় কৃষি ইউনিট (কৃষি খাত) থেকে প্রদর্শনীর জন্য অনুদান প্রদান করা হয় এবং ওই কৃষক তার জমিতে টিয়া জাতের করোলা চাষ করার পরামর্শ দেয়া হয়।

বেসরকারি সংস্থ্যা এনডিপির এ পরামর্শে পরিবেশ বান্ধব চাষ পদ্ধতির জন্য জমিতে জৈব সার ব্যবহার করতে উদ্বুদ্ধ করা হয়। সেইসাথে জমিতে মালচিং পেপার,ফেরোমন ফাঁদ, হলুদ স্টিকি কার্ড, নীল স্টিকি কার্ড এবং জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করা হয়। প্রান্তিক কৃষক রেজাউলকে মালচিং পেপারে করোলা চাষের আগে আধুনিক প্রযুক্তিতে উচ্চফলনশীল ফসল জাতের উপর প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। সবজি জমিতে মালচিং ব্যবহারে পোকামাকড়ের আক্রমন কম হয়। এসব আধুনিক প্রæযুক্তির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এবং প্রথম পর্যায়ে একই গ্রামের এক কৃষকের ২১ শতক জমি লিজ নিয়ে টিয়া জাতের করোলা চাষ করে। এ করোলা চাষে বাম্পার ফলন হয়। বাজার ভালো থাকায় রেজাউল দম্পত্তির মুখে হাসিও ফুটে। অর্থাৎ প্রথম বছরেই এ চাষে সাফল্যের মুখ দেখে তারা। বর্তমানে হাটবাজারে প্রতি কেজি করলা ৫০ টাকা থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি করছে। অনেক পাইকারী ব্যবসায়ীও তার বাগান থেকে করোলা কিনে নিয়ে অনত্র বিক্রি করছে।

আর ২১ শতক জমিতে এ চাষে প্রায় ২১ হাজার টাকা খরচ হয়েছে এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার টাকার করোলা বিক্রি হয়েছে। এতে ওই কৃষক পরিবারে এখন স্বচ্ছলতাও ফিরে এসেছে। এমনকি তার এ লাভে স্থানীয় অনেক কৃষক এ করোলা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছে। ওই কৃষক দম্পত্তি জানান, এ টিয়া জাতের করোলা চাষের লাভের টাকা দিয়ে ছেলে মেয়ের লেখাপড়ার পাশাপাশি ভালোভাবে এখন সংসার চলছে এবং পশু পালনসহ আরো জমি লিজ নেয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া জমিতে মালচিং পেপার দিয়ে তরমুজ চাষ শুরু করা হয়েছে। করোলা বাগান চাষ করে আরো সফলতা পাওয়ায় সকলের দোয়া চান। এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, রেজাউলের মতো এ জেলার অনেক প্রান্তিক কৃষক সবজি চাষে স্বচ্ছলতা ফিরে পেয়েছে। এজন্য সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে সবজি বিজ বিতরণ করা হয় এবং এ সবজি চাষে পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

স্বচ্ছলতা,করোলা
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত