
সিরাজগঞ্জের অসহায় কৃষক আয়নাল ফকির (৪০) দম্পতি জমি লিজ নিয়ে পেইনা পল্লা (সবজি) চাষ করে সংসার চালাচ্ছেন। বাজারে এ সবজির দাম ভালো থাকায় তার মুখে হাসি ফুটেছে। ইতোমধ্যেই তার পরিবারের সচ্ছলতাও ফিরে এসেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার শয্যভান্ডার খ্যাত উল্লাপাড়া উপজেলার বেতকান্দি গ্রামের আয়নাল ফকিরের নিজস্ব জমিজমা ও বসতবাড়ি নেই। তিনি প্রায় ২০ বছর আগে একই এলাকার শিল্পী বেগমকে বিয়ে করেন এবং শ্বশুর বাড়িতেই দোচালা টিনের ঘরে বসবাস করেন। বিয়ের পর থেকে ওই দম্পতি চরম আর্থিক সংকটে ভুগছিলেন।
তার স্ত্রী আক্ষেপ করে এ প্রতিবেদককে বলেন, স্বামী দিনমজুরের কাজ করে দুঃখ কষ্টের সংসার চলছিল। এমতাবস্থায় তার ঘরে ১ ছেলে ও ১ মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। এতে সংসারে আরো অভাব অনটন বাড়তে থাকে। স্থানীয়দের পরামর্শে এ অভাব লাঘবে একই গ্রামের কবির বিএসসির প্রায় ২৫ শতাংশ ফসলি জমি লিজ নেয়া হয়। প্রতি বছরে ৯ হাজার টাকায় এ জমি লিজ নিয়ে কয়েক বছর ধরে সবজি চাষ করা হচ্ছে। এ বছর জমিতে টমেটোসহ অন্যান্য সবজি চাষ করা হয় এবং টমেটো চাষ পরবর্তীতে প্রায় আড়াই মাস আগে পেইনা পল্লার (সবজি) বীজ রোপণ করা হয়। আয়নাল দম্পতি এ বাগান পরিচর্যা করছেন।
এবার এ সবজির বাগানে বাম্পার ফলন হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ ধরে হাইব্রিড জাতের এ পেইনা পল্লা উৎপাদন শুরু হয়েছে। এ সবজির বাগান থেকে ব্যবসায়ীদের কাছে পাইকারি দামে প্রতিকেজি পেইনা পল্লা ৪০/৪৫ টাকা কেজি বিক্রি করা হচ্ছে এবং তারা স্থানীয় হাট বাজারে এ পেইনা পল্লা ৬০/৭০ টাকা কেজি বিক্রি করছে। গত বছরের চেয়ে এ বছর এ সবজির উৎপাদন বেশি হচ্ছে। বাজারে দাম ভালো থাকায় ওই দম্পত্তির সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে।
ওই দম্পত্তির আশা, পল্লা চাষের পাশাপাশি অন্যান্য লাভজনক সবজি চাষের উদ্যোগ নিবেন। এজন্য তারা স্থানীয় কৃষি বিভাগের সহযোগিতাও চেয়েছেন এবং এ চাষে খরচ কম লাভ বেশি থাকায় অনেক কৃষক আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। ইতোমধ্যেই এ অঞ্চলের অনেক কৃষক বিভিন্ন সবজি চাষে ঝুঁকে পড়েছেন।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেছেন, প্রতিবছর ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষীদের বিভিন্ন সবজি চাষে সার ও বীজ বিতরণ করা হয়ে থাকে এবং এসব চাষে তাদের পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে বলে তিনি উল্লেখ করেন।