কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী পাগলা মসজিদের দানবাক্সে চার মাস ১৭ দিনে মোট ১২ কোটি ৯ লাখ ৩৭ হাজার ২২০ টাকা পাওয়া গেছে। এছাড়াও রয়েছে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কার ও বিদেশি মুদ্রা।
দানকৃত অর্থ মসজিদের আন্তর্জাতিক মানের ইসলামী কমপ্লেক্স নির্মাণ এবং জেলার দরিদ্র ও অসহায় রুগীদের চিকিৎসায় ব্যয় হবে বলে জানানো হয়েছে।
মসজিদের লোহার দানসিন্ধুক খোলার সময় দেখা যায়, শুধুই টাকা। এসব টাকা বস্তায় ভরে মসজিদের দোতলায় রাখা হয়। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নিরাপত্তায় মসজিদের মেঝেতে বসে টাকা গণনা করেন প্রায় আড়াইশ মাদ্রাসা ছাত্র-শিক্ষক ও ৭০ জন ব্যাংক কর্মকর্তা। প্রতি তিন থেকে চার মাস পরপরই এমন দৃশ্য লক্ষ্য করা যায়।
এবার ৪ মাস ১৭ দিন পর শনিবার সকালে ১৩টি দানবাক্স থেকে ৩২ বস্তা টাকা বের করা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা, রূপা ও স্বর্ণালঙ্কার। চলতি বছরের ১২ এপ্রিল সর্বশেষ এই দানবাক্স খোলা হয়েছিল। তখন ১১টি দানবাক্স থেকে ২৮ বস্তা টাকা পাওয়া গিয়েছিল, যার পরিমাণ ছিল ৯ কোটি ১৭ লাখ ৮০ হাজার ৬৮৭ টাকা সহ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কার।
কয়েকজন দানকারী জানিয়েছেন, সঠিক নিয়তে এখানে দান করলে রোগ-বালাই দূর হওয়া এবং অন্যান্য মনোকামনা পূর্ণ হয়। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সব ধর্মের মানুষ নগদ অর্থ, স্বর্ণালঙ্কার, বৈদেশিক মুদ্রা, গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি সহ বিভিন্ন সামগ্রী দান করে থাকেন। মসজিদের ওয়েবসাইটেও অনলাইনে দানের ব্যবস্থা রয়েছে।
পাগলা মসজিদের সভাপতি ও কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, বর্তমানে মসজিদ দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ব্যাংক একাউন্টে শতকোটি টাকারও বেশি জমা হয়েছে, যা দিয়ে আন্তর্জাতিক মানের ইসলামিক কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে।
জনশ্রুতি অনুযায়ী, প্রায় আড়াইশ বছর আগে পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক ব্যক্তি নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদ এলাকা হারুয়ায় স্থির হন। তাকে ঘিরে অনেক ভক্ত সমবেত হন। পাগলের মৃত্যুর পর সমাধির পাশে মসজিদটি গড়ে ওঠে এবং কালক্রমে এটি পরিচিতি পায় পাগলা মসজিদ নামে।
