
রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার ভেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের পাকুড়িয়া গ্রামের এতিম নিরব ও মাহী অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়ত ওদের দিন কাটছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায়। গন্তব্যহীন ও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে ওদের ভবিষ্যৎ।
জানা গেছে, উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের কিশোর নিরব ও শিশু কন্যা মাহীর পিতা মনজুর হোসেন দেড় বছর আগে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। পিতার মৃত্যুর শোক না কাটতেই, মাত্র তিন মাস পর মা মৌসুফা বেগম ৭ বছরের শিশু কন্যা মাহী আক্তার ও এসএসসি পরীক্ষার্থী পুত্র নিরব মিয়াকে পরিত্যাগ করে অন্যত্র বিয়ে করে সংসার শুরু করেন।
বাবা-মাকে হারিয়ে এখন তারা কোথায় যাবে? কার কাছে আশ্রয় নেবে?—এই দুশ্চিন্তায় সদা হাস্যোজ্জ্বল ও চঞ্চল স্বভাবের নিরব মিয়ার মুখের হাসি মিলিয়ে গেছে। অসহায় ছোট বোন মাহীর দিকে তাকিয়ে নিরব প্রতিনিয়ত কান্না করে। একই অবস্থা মাহীরও।
এ অবস্থায় অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ভেবে রক্তের টানে এতিম দুই ভাই-বোনের দেখভালের দায়িত্ব নেন জ্যাঠা আব্দুর রউফ ও চাচা রঞ্জু মিয়া। কিন্তু তাদেরও সংসার অভাব-অনটনে জর্জরিত। তবুও প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিরব লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে এবং ছোট বোন মাহীকেও যত্ন করে আগলে রাখছে। তারা বসবাস করছে বাবা-মার রেখে যাওয়া ছোট্ট ঘরটিতেই। নিরব মিয়া আগামীর এসএসসি পরীক্ষার্থী এবং মাহী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী।
এদিকে চলতি বছরের ২০ আগস্ট জমি সংক্রান্ত বিরোধের ঘটনায় হত্যা মামলার আসামি হন নিরবের জ্যাঠা আব্দুর রউফ ও চাচা রঞ্জু মিয়া। বর্তমানে তারা দুজনেই জেলহাজতে রয়েছেন।
এসএসসি পরীক্ষার্থী এতিম নিরব কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলছিল, “আমরা এখন নিঃস্ব, অসহায়। কিভাবে বাঁচবো? ছোট বোনটাকে মানুষ করবো কীভাবে? আমি বা পরীক্ষা দেবো কেমন করে? আমরা শুধু ভালোভাবে বাঁচতে চাই।”
সে তাই সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছে।