
নারায়ণগঞ্জের ভয়াবহ যানজট, শিল্পাঞ্চলে শ্রমিকদের নিরাপত্তাহীনতা, চিকিৎসাসেবার দুরবস্থা এবং শহরের অতিমাত্রার দূষণ—এসব সমস্যা সমাধানে জরুরি পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে নবাগত জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে ব্যবসায়ী নেতা ও প্রতিনিধিদের পৃথক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “নারায়ণগঞ্জ দেশের প্রথম শ্রেণির একটি ব্যবসায়িক জোন। এখান থেকেই দেশের প্রথম নিট গার্মেন্টস রপ্তানি হয়েছে। বিসিক থেকেই বছরে অন্তত ৮ হাজার কোটি টাকার বেশি রপ্তানি হয়। ৪৫০-৫০০ কারখানায় প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার শ্রমিক কাজ করেন। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে বিসিক এলাকা ও আশপাশে মাদক কারবারি ও ছিনতাইকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান প্রয়োজন।”
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মুস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া দিপু বলেন, “শুধু শহরেই নয়, মদনপুর ও রূপসী এলাকাতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ যানজটে আটকে থাকে। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে যানজট নিরসন হলে কারখানাগুলো সময়মতো মালামাল পরিবহন করতে পারবে। নারায়ণগঞ্জের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের অবস্থা খুবই খারাপ। দিনমজুর মানুষ যাতে সুচিকিৎসা পায়, সেজন্য উদ্যোগ নিতে হবে।”
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান মুন্সী বলেন, “ট্রাফিক সমস্যা শুধু পুলিশের নয়—সিটি করপোরেশন ও জেলা প্রশাসনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় এটি সমাধান করা হবে। নারায়ণগঞ্জে কোনো অস্ত্রবাজ বা চাঁদাবাজ জায়গা পাবে না। অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার অভিযান ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।”
জেলা প্রশাসক বলেন, “অনেক প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব নিরাপত্তা কমিটি রয়েছে। এগুলো আরও সক্রিয় করতে হবে। ছোট-বড় সব ব্যবসায়ীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আমাদের অগ্রাধিকার। আপনাদের প্রত্যেকের অবদান জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। নারায়ণগঞ্জ দেশের অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি—এই সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।”
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিলুফা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হোসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তাসমিন আক্তার, চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি মাসুদুজ্জামান মাসুদসহ ব্যবসায়ী, চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প প্রতিনিধিরা।