অনলাইন সংস্করণ
১০:৫৭, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫
সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর কিছু কিছু বিষয় থাকার দরকার; কিছু কিছু পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া উচিত—এমন মতামত আপিল বিভাগকে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল সংক্রান্ত হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের শুনানি শুরু হয়।
শুনানিতে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে জানতে চান, জামায়াতের আইনজীবী বলেছেন এখন পঞ্চদশ সংশোধনীর শুনানি শেষ না করে তা মুলতবি রেখে পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেয়া উচিৎ এটি নিয়ে তাদের মত কি?
জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তারা চান এটার শুনানি শেষ হয়ে যাক এবং একটা রায় আসুক আপিল বিভাগ থেকে।
এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা আগের আপিল বিভাগের মত কোনো রায় দিতে চাইনা; যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কয়েকদিন পরে নতুন আপিল বিভাগ গঠিত হবে সেখানে এটির শুনানি হলে কেমন হয় অথবা যদি শুনানিতে একটা দীর্ঘ মুলতবি করা হয় তাহলে তো সব পক্ষই সুবিধা পায়। পরে ফের শুনানি শুরু করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, তারা আজই এর শুনানি শেষ করবেন।
২০১১ সালের ৩০ জুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপসহ সংবিধানের মোট ৫৪টি ক্ষেত্রে পরিবর্তন এনে পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পাস হয়েছিল।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত বছর এই সংশোধনীর বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে দুটি রিট করা হয়। চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১৭ ডিসেম্বর যে রায় দেয়, তাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপ–সংক্রান্ত ২০ ও ২১ ধারা সহ সংবিধানে যুক্ত কয়েকটি অনুচ্ছেদ সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ও বাতিল ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে পূর্বের গণভোটসংক্রান্ত বিধান (অনুচ্ছেদ ১৪২) পুনর্বহাল করা হয়। আদালত আরও বলেন, সংশোধনীর বাকি অংশ নিয়ে ভবিষ্যৎ সংসদ আইন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদকসহ চারজন, নওগাঁর মোফাজ্জল হোসেন এবং জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল পৃথক তিনটি আপিল করেন। গত ৩ ডিসেম্বর থেকে আপিল বিভাগের ধারাবাহিক শুনানি চলছে।
গতকাল শুনানিতে শিশির মনির বলেন পঞ্চদশ সংশোধনী আইন পুরো বাতিল হলে আবার বাকশাল ফিরে আসবে। সংবিধান থেকে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ বাদ পড়ে যাবে। যেভাবে আছে, সেভাবে থাকলে বৃহত্তর দৃষ্টিকোণে দেখার সুযোগ বেশি থাকবে। আর এই ব্যাপ্তিটা খোলা থাকা উচিত, গণভোটের ফলাফলের ভিত্তিতে যেন সংবিধান সংস্কার পরিষদ বিষয়গুলোতে উপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারে।