
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গভীর রাতে ১০/১২টি পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে বাড়িঘর ভাঙচুর ও শ্লীলতাহানির ঘটনার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাত ৩টার দিকে গজারিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত গুয়াগাছিয়া ইউনিয়নের শিমুলিয়া, বালুয়াকান্দী ও জামালপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন— নুরজাহান বেগম (৭০) রিনা (৪০), মনিকা (৩০), শিউলি (৩৫), কামরুন নাহার (৪০), পিংকি (৩১), ছফিরুন (৫৫)। এদের মধ্যে তিনজন গজারিয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ অন্যান্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রিনা বেগম জানান, গ্রামের জিতু রাঢ়ীর ছেলে জিহাদ ও সাব্বির, কুদ্দুসের নেতৃত্বে ১২ থেকে ১৫ জন সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা পিস্তল, বন্দুক, রামদা ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে আমাদের দুই বোন, ভাই, মামাসহ আত্মীয় স্বজনদের ১০/১২টা বাড়িতে হামলা চালিয়ে আমাদের মারধর, ভাঙচুর করে বাড়িতে ও নারীদের গায়ে থাকা সব স্বর্ণালংকার, নগদ টাকাসহ সব কিছু নিয়ে গেছে।
এ সময় কান্না জড়িত কণ্ঠে সত্তোরর্ধ নুরজাহান বেগম বলেন, রাতে ১০টার মধ্যেই ঘুমাইয়া পড়েছিলাম। গভীর রাতে হামলার শব্দে ঘুম ভাঙে। শক্রতা থাকলে আমার ছেলেদের সাথে আছে কিন্তু ওরা আমাকেও হাত-পা বেধে পিঠাইছে, বাড়িগুলোতে যা ছিল সব নিয়ে গেছে, আমাদের আর কিছু নাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক মো. নাফিজ আহমেদ জানান, হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য তিন নারী এসেছেন, তাদের গায়ে জখম ও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, জামালপুর গ্রামের ২ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাহমুদ আলী মেম্বারের বাড়িতে ৪টা ঘর, নয়ন সরকারের বাড়ি, শিমুলিয়া বালুয়াকান্দি গ্রামের প্রবাসী সামাদ, রিনা, আলন, লালন, আক্তার সরকার, শিউলি বেগমসহ মোট ১০/১২টি পরিবারের ঘরে হামলার চিহ্ন, ঘরের দরজা জানালা ভাঙা, ভিতরে আসবাব পত্র, ফ্রিজ, খাট, সোফা, কাঁচের জিনিসপত্র সব ভাঙচুর করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সুফিয়া নামে এক নারী বলেন, রাত ৩টার দিকে সন্ত্রাসীরা বাড়িতে এসে ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে মহিলা ও বাচ্চাদের জিম্মি করে মারপিট করে ঘরের আলমারি ও অন্যান্য আসবাবপত্র ভাঙচুর করে সোনা-গয়না টাকা-পয়সা বিভিন্ন মালামাল মোবাইল, টেলিভিশন ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যায়।
অভিযোগের বিষয়ে জিতু রাঢ়ী জানান, ঘটনার সময় তিনি এলাকায় ছিলেন না। স্থানীয় নয়ন-পিয়াস বাহিনীর হাতে পূর্বে নির্যাতিত গ্রামবাসী এই হামলা চালিয়ে থাকতে পারে। এই ঘটনায় তার কোনো লোকজন জড়িত না।
এ বিষয়ে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়েছি। ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি, গুয়াগাছিয়ায় শান্তি বজায় রাখতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ।
উল্লেখ্য, উপজেলার গুয়াগাছিয়ার অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনের পর একাধিক ঘটনায় নয়ন-পিয়াস বাহিনী বিতাড়িত হওয়ার পর থেকে জিতু বাহিনী বেপরোয়া হয়ে ওঠে বলে জানা গেছে।