শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার দাওধারা কাটাবন এলাকায় সোমবার দুপুরে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি বহরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলায় অন্তত ছয় জন সাংবাদিক গুরুতর আহত হয়েছেন।
স্থানীয় প্রশাসন গারো পাহাড়ের বনভূমিতে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়ার পর বন বিভাগের আপত্তির কারণে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এই প্রেক্ষাপটে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে স্পষ্ট করেন, 'এই বনভূমিতে কোনো পর্যটন কেন্দ্র হবে না, বরং এখানে বন্যহাতির জন্য অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হবে।'
তবে উপদেষ্টার এই ঘোষণায় বনভূমির পার্শ্ববর্তী এলাকার কয়েকটি গোষ্ঠী ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণের পক্ষে ও বিপক্ষে থাকা দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব তীব্র হয়ে ওঠে। এক পর্যায়ে রিজওয়ানা হাসানের গাড়ি বহর আটকে বিক্ষোভ শুরু হয় এবং উগ্র জনতা সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়। এ ঘটনায় এখন টিভির সাংবাদিক জাহিদুল খান সৌরভ, সময় টিভির ভিডিও জার্নালিস্ট বাবু চক্রবর্তী, বাংলা টিভির নাঈম ইসলাম ও বাংলাদেশের খবরের শাহরিয়ার শাকিরসহ ছয়জন আহত হন।
বন বিভাগের মতে, শেরপুরের গারো পাহাড় সংলগ্ন তিনটি উপজেলার প্রায় ২১ হাজার একর বনভূমির মধ্যে প্রায় ১৫ শতাংশ জায়গা দখলদারদের দখলে রয়েছে। সম্প্রতি ওই এলাকায় ২২৩ একর খাস জমিতে পর্যটন কেন্দ্র নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়, যার মধ্যে ৩২ একর সংরক্ষিত পাথর মহাল হিসেবে চিহ্নিত। বন বিভাগের আপত্তির কারণে এই প্রকল্প আপাতত স্থগিত রয়েছে।
পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান সাংবাদিকদের জানান, 'এই বনভূমি আমাদের জাতীয় সম্পদ, যা কোনোভাবেই পর্যটনের নামে ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেওয়া যাবেনা।' তিনি আরও বলেন, 'এখানে বন্যহাতির জন্য অভয়ারণ্য গড়ে তোলা হবে, যা পরিবেশ রক্ষায় বড় ভূমিকা রাখবে।'
সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা করা হয়েছে। শেরপুর প্রেসক্লাবসহ স্থানীয় সাংবাদিক সমাজ এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দ্রুত দোষীদের আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে।