মুসলিম জাতির সবচেয়ে বড় আনন্দের দিন ঈদ। মনের সব কালিমা দূর করে মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ভুলে ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দ্য-সম্প্রীতির অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপনের দিন ঈদ। ঈদের দিনে কিছু সুন্নত আমল রয়েছে, এখানে তা তুলে ধরা হলোÑ
গোসল ও পবিত্রতা অর্জন করা : ঈদের নামাজের জন্য গোসল করা ও মিসওয়াক করা সুন্নাত। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.) ঈদুল ফিতর ও আজহার দিন গোসল করতেন।’ (বোখারি : ১/১৩০)
ভালো পোশাক পরা : রাসুলুল্লাহ (সা.) ঈদের দিন ভালো পোশাক পরতেন। হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর লাল ও সবুজ ডোরার একটি চাদর ছিল, তিনি তা দুই ঈদ ও জুমার দিন পরতেন।
সুগন্ধি ব্যবহার : রাসুলুল্লাহ (সা.) ঈদের দিন বিশেষভাবে সুগন্ধি ব্যবহার করতেন। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর তিনটি পছন্দনীয় জিনিসের মধ্যে একটি সুগন্ধি। (তিরমিজি : ১০৮০)ঈদের দিনে খাওয়া : কোরবানির ঈদে নামাজের আগে কোনো কিছু না খাওয়া মুস্তাহাব। নামাজের পরে প্রথমে কোরবানি করা পশুর গোশত খাওয়া সুন্নত। (তিরমিজি : ৫৪৫)
ঈদগাহে যাওয়া : ঈদগাহে একপথ দিয়ে যাওয়া ও অন্যপথ দিয়ে ফেরা সুন্নত। (বোখারি : ৯৮৬)
হেঁটে ঈদগাহে গমন : কোনো ধরনের অপারগতা ও অক্ষমতা না থাকলে, হেঁটে ঈদগাহে গমন করা সুন্নত। আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) হেঁটে ঈদগাহে গমন করতেন এবং হেঁটে ঈদগাহ থেকে প্রত্যাগমন করতেন।’ (তিরমিজি : ১২৯৫)
তাকবির পাঠ করা : ঈদের দিন তাকবির পাঠের মাধ্যমে আল্লাহতায়ালাকে বেশি বেশি স্মরণ করা সুন্নত। পুরুষরা এ তাকবির উঁচু আওয়াজে পাঠ করবে, মেয়েরা নীরবে। এ তাকবির জিলহজ মাসের ৯ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত পাঠ করতে হবে। (ফাতহুল বারি : ২/৫৮৯)
ঈদের নামাজ আদায় : ঈদের দিন ঈদের নামাজ পড়া জরুরি। ঈদের নামাজ সুন্নতে মুয়াক্কাদা। এই নামাজ আদায়ে রয়েছে অনেক সওয়াব।
শুভেচ্ছা বিনিময় : ঈদের দিন একে অপরের সঙ্গে দেখা হলে শুভেচ্ছা বাক্য বলা। এরকম বলা যেতে পারেÑবাংলা উচ্চারণ : ‘তাকাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম।’ বাংলা অর্থ: আল্লাহ কবুল করুন আমাদের এবং আপনার পক্ষ থেকে।’ (বায়হাকি, ৩/৪৪৬)ঈদের খুতবা শোনা : ঈদের নামাজ শেষে খুতবা মনোযোগ সহকারে শোনা। আবদুল্লাহ বিন সায়িব (রা.) বলেন, ‘নবীজি (সা.)-এর সঙ্গে আমি ঈদগাহে উপস্থিত হলাম। এরপর তিনি আমাদের নামাজ পড়িয়েছেন। অতঃপর তিনি বলেন, আমরা নামাজ শেষ করেছি। যার ইচ্ছা সে খুতবা শোনার জন্য বসবে, আর যে চলে যেতে চায়, সে চলে যাবে।’ (ইবনে মাজাহ : ১০৭৩)
ঈদগাহ থেকে ফিরে নফল আদায় করা : ঈদের নামাজের আগে-পরে ঈদের নামাজের স্থানে যেকোনো ধরনের নফল নামাজ আদায় করা মাকরুহ। ঈদের নামাজের পরে ঈদগাহ থেকে বাড়ি ফিরে দুই রাকাত নফল আদায় করা সুন্নত। (ইবনে মাজাহ : ১২৯৩)
কোরবানি করা : ঈদুল আজহার দিনে সামর্থ্যবান ব্যক্তিদের ওপর কোরবানি করা ওয়াজিব। (সুরা কাউসার : ১-২)