অনলাইন সংস্করণ
১২:০২, ০৮ আগস্ট, ২০২৫
গত বছর জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয় অন্তর্বর্তী সরকার। সেই অন্তর্বর্তী সরকার আজ ১ বছর পূরণ হতে যাচ্ছে।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার পতনের তিন দিন পর ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার শপথ গ্রহণ করে।
এই এক বছরে সরকার জুলাইয়ের আকাঙ্ক্ষা অনুসারে নির্বাচনী ব্যবস্থা, শাসনব্যবস্থা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, অর্থনীতি, বিচারব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন এবং অভ্যুত্থানে নিহতদের বিচারসহ সব খাতে সংস্কার করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
গত ৫ আগস্ট ‘গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে সরকার জাতির সামনে জুলাই ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করে। ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’-এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা শেষে ‘জুলাই সনদ’-এর খসড়ার কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
একই সাথে গত ৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষণা দেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকে আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি পাঠাব, যাতে নির্বাচন কমিশন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে, পরবর্তী রমজানের আগেই, জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করে।’
পরদিন (৬ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে নির্বাচন কমিশনে একটি চিঠি পাঠানো হয়, যেখানে আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে রমজান শুরু হওয়ার আগেই নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্য বলা হয়।
সরকার ইতোমধ্যে একাধিক সংস্কার কমিশন গঠন করেছে, যার মধ্যে রয়েছে নির্বাচনী ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, পুলিশ সংস্কার কমিশন, বিচারব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, দুর্নীতি দমন সংক্রান্ত সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, স্বাস্থ্য সংস্কার কমিশন, গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন, শ্রমিক অধিকার সংস্কার কমিশন ও নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন। এসব কমিশন তাদের সুপারিশমালা জমা দিয়েছে এবং সরকার অনেক ক্ষেত্রেই সেই সুপারিশ বাস্তবায়নের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে এ বছরের জুন মাসে দেশে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি কমে ৮.৪৮ শতাংশে নেমেছে, যা গত ৩৫ মাসে সর্বনিম্ন।
জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে অধ্যাপক ড. ইউনূস বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য রয়েছে।
তিনি বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিদের সরকারের প্রতি গভীর আস্থার ফলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে।
ড. ইউনূস বলেন, গত ১১ মাসে বৈদেশিক ঋণদাতাদের কাছে ৪ বিলিয়ন ডলার সুদ ও মূলধন পরিশোধ করা হয়েছে, যা দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর পরেও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে, যা যেকোনো দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।