অনলাইন সংস্করণ
১১:৫৮, ১৩ আগস্ট, ২০২৫
বাংলাদেশে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের পর দেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি স্থিতিশীল হয়েছে। তবে কিছু বিষয়ে উদ্বেগ রয়ে গেছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, টানা কয়েক সপ্তাহের ব্যাপক ছাত্র আন্দোলন এবং পুলিশ ও আওয়ামী লীগের যুব সংগঠনের সঙ্গে সংঘর্ষে শত শত মানুষের নিহত হওয়ার পর ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপর ৮ আগস্ট নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে প্রধান উপদেষ্টা (প্রধানমন্ত্রীর সমতুল্য) করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেন রাষ্ট্রপতি। আগস্টে কিছু ঘটনা ঘটলেও দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হয়েছে, যদিও কিছু উদ্বেগ রয়ে গেছে।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) মানবাধিকার-বিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বার্ষিক এই প্রতিবেদন দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, পূর্ববর্তী সরকারের সময় যেসব বড় ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল তার মধ্যে ছিল বেআইনি বা ইচ্ছাকৃত হত্যা, গুম, নির্যাতন বা অমানবিক ও অপমানজনক আচরণ বা শাস্তি, নির্বিচারে গ্রেপ্তার বা আটক, বিদেশে অবস্থানরত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আন্তঃসীমান্ত দমননীতি, মতপ্রকাশ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় গুরুতর বাধা (যেমন সাংবাদিকদের ওপর সহিংসতা বা হুমকি, অযৌক্তিক গ্রেপ্তার বা মামলা, সেন্সরশিপ), শ্রমিকদের সংগঠন তৈরির স্বাধীনতায় বড় ধরনের বাধা, শ্রমিক নেতা ও ইউনিয়ন সদস্যদের ওপর সহিংসতা বা হুমকি এবং শিশুশ্রমের ভয়াবহতম রূপের ব্যাপক উপস্থিতি।
এছাড়া পূর্ববর্তী সরকারের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের জবাবদিহি করানোর ক্ষেত্রে ব্যাপক দায়মুক্তির অভিযোগ ছিল। খুব কম ক্ষেত্রেই কর্মকর্তা বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের শনাক্ত ও শাস্তি দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত সাবেক সরকারের সদস্যদের গ্রেপ্তার করেছে।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সংবাদমাধ্যমের নির্ভরযোগ্য প্রতিবেদনে জুলাই ও আগস্টে সাবেক ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের নানা ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে। এসব বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার জাতিসংঘের সঙ্গে একযোগে কাজ করছে এবং অপরাধীদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে দেশের প্রচলিত বিচারব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল উভয়কেই কাজে লাগানো হচ্ছে।