ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কারণ ছাড়াই মন খারাপ, বিষন্নতা ও ক্লান্তি? কী করবেন

কারণ ছাড়াই মন খারাপ, বিষন্নতা ও ক্লান্তি? কী করবেন

ভাল লাগছে না, কোন কারণ ছাড়াই খুব মন খারাপ, বিষন্নতা, হতাশা, ক্লান্তি—এমন অনুভূতি অনেকেই এই ঋতু পরিবর্তনের প্রাক্কালে অনুভব করেন। কাছের কারো কাছ থেকে এসব কথা শুনে থাকলে, একটু মিলিয়ে নিন।

মৌসুমী বায়ু অঞ্চলে বসবাসকারীদের মধ্যে ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে মনেরও পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক। দিনরাতের তাপমাত্রা, আলোর উপস্থিতি, বাতাসের বেগ, বৃষ্টিপাত—এসব বিষয় মানুষের আচরণ ও চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে। সাথে সাথে শরীরও প্রভাবিত হয়। এই সময়ে বিষন্নতা, হতাশা, হারিয়ে যাওয়া প্রিয় মানুষ বা ফেলে আসা আনন্দ/কষ্টের স্মৃতি মনে ঘুরতে পারে। এটি যে কারোরই ঘটতে পারে, যুবক হোক বা বৃদ্ধ।

এটি খুব স্বাভাবিক এবং সমাধানযোগ্য বিষয়। যদিও মানব মনে ঋতু পরিবর্তনের প্রভাবে ঘটে যাওয়া এসব অস্বস্তির প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করা যায়নি, কিছু অনুশীলন ও পর্যালোচনা থেকে যা জানা গেছে সেটাকেই সিদ্ধান্ত হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। প্রকৃতি রহস্য পছন্দ করে।

Seasonal Affective Disorder বা এসএডি হলো বছরের কোন বিশেষ সময়ে মানবমনের বিষন্নতা ও হতাশার রোগ।

এ ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তির মনে হতে পারে তার সুখ-শান্তির অভাব, সুখের প্রয়োজন। এসময় মনের সঙ্গে সঙ্গে শরীরেও কিছু পরিবর্তন ঘটে। সুখ সুখ বলে কাঁদলে ও সুখ লাভের ইচ্ছা হ্রাস পায়, কাজে অনীহা, উদ্দ্যোম কমে যাওয়া, সারাদিন ঘুমঘুম ভাব অথবা নির্ঘুম রাত কাটা, অহেতুক দুশ্চিন্তা বৃদ্ধি, খাদ্য গ্রহণে অনীহা—এসবই ঘটে।

এর একটি খারাপ দিক হলো প্রতিবছর ঠিক একই সময়ে এই মনের রোগ ফিরে আসে। ভাবুন তো, হয়তো বছর বছর এই সমস্যা আপনারও ঘটে। আমরা মনের যত্ন নিতে চাই না, শুধু দৈহিক কাজে ব্যস্ত থাকলেই ধরে নিই যে সব ঠিক আছে। কিন্তু ‘বাহ্ বেশ তো আছি’—মনেরও মন আছে, তাকে চাঙা রাখার দায়িত্বও আপনার।

এসএডি আক্রান্ত ব্যক্তি ফেলে আসা সুখের দিন, ছেড়ে যাওয়া বন্ধু-স্বজন, প্রিয় মুখ, হারানো অথবা অর্জনের মুহূর্তের স্মৃতি মনে করেন। যদি সম্ভব হয় একবার প্রিয় মানুষটিকে ডাকুন, তার কাছে চলে যান, মা, বাবা, স্ত্রী, স্বামী, সন্তান যদি কেউ দূরে থাকে দ্রুত ছুটি নিয়ে তার কাছে যান। বসে কথা বলুন, বন্ধুদের আড্ডা অনুষ্ঠানে যোগ দিন, সম্ভব হলে প্রকৃতির মাঝে বেড়িয়ে আসুন, দেখবেন কষ্ট কখন ভুলে গেছেন।

আত্মার শান্তির জন্য সবচেয়ে বেশি যা করবেন তা হলো ইবাদাত, প্রার্থনা, স্রষ্টার কাছে নিজেকে সমর্পন।

এটুকু নিজ প্রচেষ্টা, এতে ও কাজ না হলে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন। মনের যত্ম নিন, ভালো থাকুন। হেমন্তের দিনগুলো শুভ হউক।

মাসুমা আক্তার

পুলিশ সুপার

২৫ বিসিএস (পুলিশ)

কী করবেন,বিষন্নতা ও ক্লান্তি,কারণ ছাড়াই মন খারাপ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত