ঢাকা সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মতভেদ থাকবে, মুখ দেখাদেখি যেন বন্ধ না হয় : তারেক রহমান

মতভেদ থাকবে, মুখ দেখাদেখি যেন বন্ধ না হয় : তারেক রহমান

বিভিন্ন ইস্যুতে মতভেদ থাকলেও দেশ ও জনগণের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে এক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

তিনি বলেছেন, রাজনৈতিক দলের সদস্যদের বলতে চাই—বিভিন্ন ইস্যুতে মতভেদ থাকবে। এসব মতভেদ দূর করতে আমাদের আলোচনা চলবে। জাতীয় কোনো ইস্যুতে, গণতন্ত্রের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যাতে মুখ দেখাদেখি বন্ধ না হয়। জাতীয় স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কারণ আমি বিশ্বাস করি ধর্ম, দর্শন, মত যার যার, রাষ্ট্র আমাদের সবার।

বুধবার (৬ আগস্ট) রাজাধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির বিজয় র‌্যালির আগে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সময় বিএনপিসহ বিরোধী দল এবং মতের নেতাকর্মী সমর্থকদের বিরুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মিথ্যে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দেয়া হয়েছে। বিএনপি’র এমন নেতাও রয়েছেন, যাদের বিরুদ্ধে শতাধিক মামলাও রয়েছে। এমনকি চার শতাধিক মামলা রয়েছে। গুম অপরণের শিকার হয়েছেন বিএনপিসহ বিরোধী দলের শত শত রাজনৈতিক নেতাকর্মী।

শুধুমাত্র ২৪- এর এক মাসে গণঅভ্যুত্থানে বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, খুনিদের বন্দুকের নল থেকে মায়ের কোলে থাকা চার বছরের শিশু রেহাই পায়নি। ক্ষমতাসীন ফ্যাসিস্টের কারণে আমাদের অনেক সাহসী সেনা কর্মকর্তাদের হত্যাযজ্ঞের শিকার। শেখ হাসিনার আমলে দেশে অন্ধকারের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছিল।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আজকের এই মিছিল অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আলোর পথে যাত্রা। তবে এ যাত্রা কিন্তু খুব সহজ নয়। ফ্যাসিবাদ উগ্রবাদ, চরমপন্থা যাতে আলোর পথে অন্ধকারের রেখা টেনে যেতে না পারে, এ ব্যাপারে গণতান্ত্রিক জনগণকে সদা সতর্ক থাকার আহ্বান জানাই।

তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের গণতন্ত্র ও জনগণের সামনে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার এক অপার সম্ভাবনা এবং সুযোগ তৈরি হয়েছে। যদি এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশের জনগণের রাজনৈতিক শক্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি, জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করতে পারি, তাহলে ভবিষ্যতে আর কেউ ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা করার সুযোগ পাবে না। দেশকে তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারবে না।

তারেক রহমান বলেন, আমাদের ভাই-বোন সন্তান-স্বজনদের জীবনের বিনিময়ে আমাদের অর্জিত ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলদেশে আর কখনো ’২৪ এর মতো রক্ত দেখতে হবে না। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রতিটি নাগরিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলতে চাই, আপনার নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য, পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সামনে একটি নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য একজন নাগরিক হিসেবে সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এসেছে।

তিনি বলেন, আমি স্বাধীনতা প্রিয়, গণতন্ত্র প্রিয়, দেশবাসীর উদ্দেশে আহ্বান জানিয়ে বলতে চাই, যিনি যেই দলেরই সদস্য, রাজনৈতিক দলেরই সদস্য হোন না কেন, আমাদের অবশ্যই সবার একটি কথা মনে রাখা দরকার। ফ্যাসিস্ট শাসন আমলে আমরা কেউই নিরাপদ ছিলাম না। আমাদের সন্তানেরা কেউ নিরাপদ থাকতে পারেনি। আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছিল। আমাদের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নিয়ে গণতান্ত্রিক জনগণের জন্য সমগ্র বাংলাদেশটাকেই বরাবর বন্দিখানা, আয়নাঘর বানিয়ে ফেলা হয়েছিল।

‘সুতরাং দেশে যদি গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন না থাকে তাহলে নারী কিংবা পুরুষ, সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগুরু কেউই নিরাপদ নই। একমাত্র গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। সেজন্যই আসুন, দেশে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র এবং সরকারে জনগণের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করার জন্য, হাজারো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকারগুলোর সুষ্ঠ প্রয়োগ এবং চর্চা করি’।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে, বিএনপি কী ধরনের সরকার এবং রাজনীতি পরিচালনা করবে তা দলের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যেই ৩১ দফার মাধ্যমে একটি রূপরেখা জনগণের সামনে উপস্থাপন করেছি। একই সাথে অন্তর্বর্তী সরকারসহ সকল গণতান্ত্রিক, রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পরামর্শ করে সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছে।

তবে দেশ এবং জনগণের কল্যাণে এ সকল কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য জনগণের সমর্থন এবং সহযোগিতা চান তিনি।

তারেক রহমান,বিএনপি,বিজয় র‌্যালি,জাতীয় স্বার্থ,মতভেদ
আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত