অনলাইন সংস্করণ
১৬:৪৬, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
বাংলাদেশে নতুন সিগারেট কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট। সংগঠনটি বলছে, বিদেশি সিগারেট কোম্পানিগুলো বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (বিডা) ব্যবহার করে দেশের সিগারেট বাজার সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে, যা জনস্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তার জন্য গুরুতর হুমকি।
জোটের বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, দেশের ৩৫টি মন্ত্রণালয় যখন স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিয়ে অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে, তখনই বিদেশি কোম্পানিগুলো তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে। তারা রপ্তানি অঞ্চলে নতুন তামাক প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা খোলার পরিকল্পনা করছে, যা দেশে তামাক উৎপাদন বাড়াবে এবং খাদ্য সংকটের ঝুঁকি তৈরি করবে।
তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে তামাকের ওপর রপ্তানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয় এবং ২০১৯ সালে সম্পূর্ণভাবে মওকুফ করা হয়। এর ফলে তামাক চাষের জমির পরিমাণ ৯২ হাজার হেক্টর থেকে বেড়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪২ হাজার হেক্টর।
তামাকবিরোধী জোট বলছে, তামাক চাষ বৃদ্ধি খাদ্য নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে। অথচ বাংলাদেশের কৃষি ও মৎস্য খাতে রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (FAO)-এর প্রতিবেদন অনুসারে, স্বাদুপানির মাছ আহরণে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। একইভাবে কাঁঠাল উৎপাদনেও দেশটি ভারতের পরেই অবস্থান করছে, কিন্তু রপ্তানিতে পিছিয়ে আছে। এ খাতে ইপিজেড ব্যবহার করে উদ্যোগ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে সংগঠনটি।
সংবিধানের ১৮(ক) অনুচ্ছেদে ক্ষতিকর পণ্য নিষিদ্ধের নির্দেশনা, ২০০৫ সালের তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন এবং সুপ্রিম কোর্টের রায় উল্লেখ করে জোট বলছে, নতুন তামাক কোম্পানিকে অনুমোদন দেওয়া সরকারের জনস্বাস্থ্য উন্নয়ন প্রচেষ্টার পরিপন্থী। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী বিদ্যমান কোম্পানিগুলোকে ধীরে ধীরে এই ব্যবসা থেকে সরিয়ে অন্য খাতে স্থানান্তরিত করার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছে তারা।
তামাকবিরোধী জোট আরও জানিয়েছে, ইতোমধ্যে দেশীয় কিছু কোম্পানি তামাক থেকে সরে এসে কৃষি ও শিল্প খাতে বিনিয়োগ করছে, যা আশার বার্তা। তাই দেশে নতুন সিগারেট কোম্পানির প্রসার বা স্থাপনের যে কোনো উদ্যোগ সংবিধান ও আদালতের রায়ের পরিপন্থী হবে বলে মন্তব্য করেছে সংগঠনটি।