
সরকারের রুটিন টিকাদান ব্যবস্থা আরও কার্যকর ও টেকসই করতে সমন্বিত ও ইন্টারঅপারেবল আন্তঃমন্ত্রণালয় ডাটা এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্ম বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এ লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি স্ট্র্যাটেজিক কমিটি এবং কারিগরি বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি টেকনিক্যাল কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই) এর টিকা প্রদান সিস্টেমকে ইউজ কেস হিসেবে ব্যবহার করা হবে এবং ওই সিস্টেম বাস্তবায়নকালে চ্যালেঞ্জ ও প্রাপ্ত ফলাফলকে জাতীয় ইন্টারঅপারেবল সিস্টেম তৈরির ভিত্তি হিসেবে নেওয়া হবে।
ঢাকায় এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই), আইসিটি বিভাগ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত একটি উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারণী সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সংস্কার ও সমন্বয় শাখার সচিব জাহেদা পারভীন এ ঘোষণা দেন।
উপস্থিত বক্তাদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. আশরাফী আহমদ, আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন উইং) মো. মামুনুর রশীদ ভূঞা, এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মোহা. আব্দুর রফিক, যুগ্ম প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. কামরুল হাসান ও যুগ্ম প্রকল্প পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মো. রশিদুল মান্নাফ কবীর, আইসিটি বিভাগের যুগ্ম সচিব (ডিজিটাল গভর্ন্যান্স ও সিকিউরিটি উইং) মো. মজিবর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (এমআইএস) ডা. আবু আহাম্মদ আল মামুন, এটুআই-এর প্রোগ্রাম ম্যানেজমেন্ট লিড আব্দুল্লাহ আল ফাহিম, ডাটা ও রিসার্চ ক্লাস্টার হেড আনোয়ারুল আরিফ খান ও ইন্টারন্যাশনাল প্রজেক্ট ম্যানেজার মাহা আবু এমিয়ার।
সভাটি সঞ্চালনা করেন এটুআই-এর ডিজিটাল হেলথ বিভাগের প্রধান ডা. শবনম মোস্তারী।
শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “বর্তমানে জন্মনিবন্ধন, সিভিল রেজিস্ট্রেশন অ্যান্ড ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস (সিআরভিএস), ইপিআই, শিক্ষা ও পরিচয়পত্র সংক্রান্ত বিভিন্ন দপ্তরে নাগরিকের তথ্য থাকলেও সেগুলো পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত নয়। ফলে একই তথ্য বারবার জমা দিতে হয়, যা সময় ও সম্পদের অপচয় ঘটায় এবং সেবার মানে প্রভাব ফেলে। সমন্বিত ডাটা এক্সচেঞ্জ প্ল্যাটফর্ম চালু হলে একবার সংগৃহীত তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংশ্লিষ্ট সব সিস্টেমে ব্যবহার করা যাবে। এর মাধ্যমে জন্মের সময় সংগৃহীত তথ্য টিকাদান, শিক্ষা ভর্তি, পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টসহ বিভিন্ন সেবায় ধারাবাহিকভাবে কাজে লাগানো সম্ভব হবে। এই তথ্যভিত্তিক সমন্বয়ের ফলে বিভিন্ন দপ্তর তাদের পরিকল্পনা ও লক্ষ্য নির্ধারণে নির্ভুল উপাত্ত পাবে। পাশাপাশি টিকার চাহিদা পূর্বাভাস, রিয়েল-টাইম তথ্য হালনাগাদ এবং যোগ্য শিশু-কিশোরদের সব টিকার আওতায় আনা সহজ হবে। নাগরিকদের তথ্য প্রদানের ঝামেলা কমবে এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম আরও দক্ষ হবে।”
জাহেদা পারভীন বলেন, “জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ ২০২৫ অনুযায়ী ইন্টারঅপারেবিলিটির ক্ষেত্রে সমন্বয়ের দায়িত্ব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের। সেক্ষেত্রে আইসিটি বিভাগ উদ্যোগ নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা করা হবে। জন্মনিবন্ধন নম্বর এবং এনআইডি সিস্টেমের মধ্যে সমন্বয় করা যেন দুই ক্ষেত্রেই একই ধরনের তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে নাগরিকদের ইউনিক আইডি নিশ্চিত করা যায়। এক্ষেত্রে সচিব, সমন্বয় ও সংস্কার, মন্ত্রিপরিষদ এর নেতৃত্বে একটি কমিটি হবে এবং সচিব, আইসিটি বিভাগের এর নেতৃত্বে একটি কমিটি হবে। বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিজিটাল আর্কিটেকচার এর ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট আইনের অভাবে এটি প্রতিটি দপ্তরে বাস্তবায়নে যে অসফলতা হয়েছিল, জাতীয় তথ্য ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫ এর মাধ্যমে সেটি দূর করা সম্ভব। এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের সরকারি তথ্য আদান–প্রদানে ইন্টারঅপারেবিলিটি নিশ্চিত হবে এবং নাগরিকসেবায় একটি নতুন মানদণ্ড স্থাপিত হবে।”