প্রিন্ট সংস্করণ
০০:০০, ০৯ আগস্ট, ২০২৫
জুলাইয়ে বিষণ্ণতা কাটে না কেন
নেই কোনো অভিযোগ, নেই কোনো অভিমান
কোনটা যে বড় আর কোনটা যে ছোট-
না বুঝি জুলাই আর নাইবা বুঝি ডিসেম্বর;
বাকি দশ মাস, মায়ের প্রসব ব্যথারই মতো যন্ত্রণার
ফেলে দাও, দূরে ছুড়ে আধুনিক অধম বিজ্ঞান
কী জন্মালে খুশি, শুনি, ছেলে নাকি মেয়ে...
দেশ: আমাদের মা- চাই তো সাম্য আর সমতা;
কপালের ফের দুঃখিত মানুষের মতো, বিকল ও মৃত
জুলাই বিপ্লব ও একাত্তরের যুদ্ধ- দ্বৈত স্বাধীনতা
ফলাফল কিন্তু যা-তা, এক এবং একত্র বাসা;
বাস করে কারা? এ অনিয়মের আলিসান বাসায়;
অজ্ঞাতসারে ঝরায় চোখ, চোখে জল আছে যত!
ভাষা হারায় সমস্ত বর্ণমালা কাঁদতে পারে নাই কেবল
জীবনের ব্যথা আর কঠিন গুঞ্জন, কেবলই একা,
কিছুটা বিলীন হয়, কিছুটা অঙ্গার হয় পোড়ে—
লুকানোর নেই স্থান- নিঃশ্বাসে দীর্ঘশ্বাসেরই সর্বনাশ!
জুলাইয়ের ঈদ ডিসেম্বরের মতো শ্মশানের আগুন
রক্ত পুড়ে ছাই হলো, হলো ক্লান্ত বিধ্বস্ত জনজীবন!
চোখের জল হারিয়ে গেল- নতুন পুরোনো ঘর-
সুদীর্ঘ জলের চিঠি হাতে, হাঁটে নীল রঙের বুক পকেট
দুঃসময়ে মুখোমুখি
আমি সুনিশ্চিত এতটুকু কিছুতেই কিছু বলব না
আমি নিশ্চিন্ত মনে এখানে কী কী কল্পনা করেছিলাম
আমি কখনোই বলব না, কোনো কিছুতেই কিছু আর
রাজনীতির স্কুলে পড়িনি, বুঝিনি রাজনীতিবিদ খিলাড়ি...
সগোত্রীয় অধিভুক্ত দলে পাল্লায় খেলা দেখিয়ে চলে
দক্ষ ক্রীড়ক পরিচালনা- ভাবতেই ভালো লাগে
ভাবনাগুলোর জট বেঁধে গেল ঘুমে অচেতন পলিটিক্স
চতুর্দিকে পাহাড়ঘেরায়- কে কখন খেলে খেলারাম!
শেকলে বাঁধা অজস্র পাখি- কী কারণে কিচিরমিচির
বেঁচে কী গেল চিরতরেই- সুনিবিড় মনোহর স্বপ্নে?
মেঘ যেমন অবজ্ঞা ছুঁড়ে নামে বৃষ্টি স্বপ্নের আকাশ-
আকাশ বেচারাই জড়ালে বিভাবনার ত্বক জড়িয়ে!
রোজকার মতো বৃষ্টি নামে- বৃষ্টিতে স্বপ্নের পাখা গজে
তুমুলযুদ্ধ ঘোরতর ধ্বংসযজ্ঞ- পাখা কতটুকু মেলে?
কখন যেন মেলেছিলাম অস্তিত্ব ও অস্তিত্বের কিছু;
কোনো এক অদৃশ্য মরণ যেন টেনে নিয়ে গেছে সব।
শূন্য আরও গহিন শূন্যতা- বাকিটুকু নষ্ট রাজনীতি-
দ্বিধার আকাশে অবশেষ জমাট রক্তের বৃষ্টিজল-
একদিকে ক্লান্তির স্বদেশ অন্যদিকে বিষাদ পৃথিবী,
রক্তের নেশায় ঝরনাধারা বহে গহিন জলের পরে।
যখন রাজনীতিই রক্ত আর ক্ষমতা আরও রক্তাক্ত
তখন লিখতেই পারি না আমি, কবিতার শিরোনাম,
খণ্ডিত গৌরব ধ্বংসের কিনারে উজাড় হলো বাগান
কী করে এখন আমি মানব হৃদয়ে নৈবেদ্য সাজাই!
জুলাই ধরে ভাঙা বুকের নাথ
জুলাই মাসের একুশ কেন শোকে
ট্রাজেডিও নোংরা নীতির ফাঁকে।
বাংলাদেশের কাঁধে চাপা ভার-
অসীম শূন্যে অন্তঃপুরের মার!
বার্ন ইউনিট জ্বালা বোঝে বুক
স্বজন কত দুঃখ পোষে শোক!
হঠাৎ করে মৃত্যু আসে রোজ,
সব মরণে যম রাখে না খোঁজ!
স্বজন কাঁদে পাথর শোকে ফাল,
লক্ষ্যচ্যুত মাইলস্টোন কাল!
হেলায় টানি স্বার্থচলা গাড়ি,
কাজে-কর্মে আকাশ-পাতাল পড়ি।
জীবন নিয়ে বড্ড খেলি ভাই,
দোষ যেন সব দুর্ঘটনার তাই।
আষাঢ়-শ্রাবণ রক্ত করে ভোগ,
বজ্র টানে হৃদয় ধরা যোগ!
যার চলে যায় সে-ও যেন এক পথ
জুলাই ধরে ভাঙা বুকের নাথ!