ঢাকা রোববার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

টেকনাফে পানের আবাদ বাড়ছে

টেকনাফে পানের আবাদ বাড়ছে

আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ থাকায় চলতি মৌসুমে টেকনাফ উপজেলায় পান চাষের বাম্পার ফলন হয়েছে। ফলে পানের সাফল্য পাওয়ার কারণে আগ্রহ বাড়ছে পান চাষের। বাজারে পানের চাহিদা ও দাম থাকায় চাষিরাও লাভবান হচ্ছেন বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প ও স্থানীয়দের বিপুল চাহিদার কারণে বাজারে পানের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। যে কারণে বাড়ির আনাচে কানাছে পরিত্যক্ত জায়গায় পান চাষ করার জন্য কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। পানের উৎপাদনও বেড়েছে দ্বিগুণ। চলতি মৌসুমে স্থানীয় চাহিদা পূরণের পরও প্রায় ২০ কোটি টাকার পান বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রি হয়েছে বলে পান বেপারিরা জানান। টেকনাফ সদর ইউনিয়নের বড় হাবিবপাড়া এলাকার পানচাষি আবদুল আমিন জানায়, পান চাষে অন্যান্য তরিতরকারি চেয়ে অধিকতর যত্ন করতে হয়।

তিনি জানান, পান চাষ ফুল চাষের মতো। যত যত্ন করবেন তত আয় হবে। চলতি মৌসুমে পানের বরজ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আয় হয়েছে। পাশাপাশি আরও ২-৩ লাখ টাকা আয় হতে পারে। তার পাশাপাশি ঐ এলাকায় আগে পান চাষে এত কদর ছিল না। যেহেতু পান চাষে উপকরণ সংকটসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়ে অনেকেই পান চাষ করেনি। বর্তমানে পান চাষিরা ধারাবাহিক লাভবান হওয়ার সুবাদে পান চাষে মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। চাষিরা জানিয়েছেন, জমি নির্বাচন, প্রশিক্ষণ ও আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে পানের উৎপাদন বেড়েছে।

এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৫৩৫ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়েছে। চাষিরা যাতে পান চাষে উৎসাহিত হয় সেই জন্য তাদেরকে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ, সার ও কীটনাশক দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন- প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনো রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত না হলে প্রতি অর্থ বছরে টেকনাফ থেকে ৩০ কোটি টাকার পান উৎপাদন সম্ভব। এসব চাষিদের সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া হলে পান চাষ করে দরিদ্র পরিবারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আসার সম্ভাবনা ছিল। বর্তমানে রোহিঙ্গা ও স্থানীয়দের চাহিদা বৃদ্ধির কারণে পানের মূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে গেছে। যা কমে আসার কোনো সম্ভাবনা নেই।

টেকনাফ পৌরসভার বাস স্টেশনে পাইকারি পান ব্যবসায়ী গফুর, জালাল ও ছিদ্দিক আহমদের সঙ্গে আলাপ হলে তারা জানান, টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়ন, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের রাজারছড়া, দরগার ছড়া, হাবিবছড়া, মহেশখালীয়া পাড়া, কচুবনিয়া পাড়া, বড় হাবিব পাড়া, বাহারছড়া ইউনিয়নের নেয়াখলীয়া পাড়া, মারিশবনিয়া পাড়া, বড় ডেইল, উত্তর শিলখালী ও শামলাপুর, হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা, জাদিমুড়া, পানখালী, হোয়াইক্যং ইউনিয়নের রইক্ষং, খানজর পাড়া, লম্বাবিল থেকে প্রতি সপ্তাহে লাখ লাখ টাকার পানের চালান শহরের বিভিন্ন আড়তদারে যাচ্ছে। আড়তদার ব্যবসায়ীরা এসব পান প্রক্রিয়াজাত করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চালান করছে। তারা বলেন, এখানে উন্নতমানের রপ্তানিযোগ্য পান উৎপাদনে কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলে পান রপ্তানি খাতে সরকার প্রচুর পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত