ঢাকা শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

রংপুর অঞ্চলে ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

রংপুর অঞ্চলে ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

রংপুর কৃষি অঞ্চলের আওতাধীন পাঁচটি জেলায় ভুট্টার ভালো ফলন হওয়ার আশা করছেন কৃষকরা, কারণ এই মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফসলের উৎপাদিত ফলন চমৎকার হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উৎপাদন খরচ কম হওয়ার পাশাপাশি ভালো ফলন পাওয়ায় এই অঞ্চলের কৃষকরা ভুট্টার চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তারা এ বছর জেলাগুলোতে ভুট্টা চাষ থেকে আরও বেশি লাভের আশা করছেন।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে-কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রংপুর অঞ্চলের পাঁচটি জেলায় ১,১৭,০৪৩ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। জেলাগুলো হলো- রংপুর, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা এবং লালমনিরহাট। বেশ ককজয়ন চাষি জানিয়েছেন যে, গত বছর তারা প্রতি মণ ১২০০-১৪০০ টাকা সন্তোষজনক হারে ভুট্টা বিক্রি করেছিলেন। এই বছর তারা আরও বেশি লাভের আশা করছেন। প্রতি বিঘা জমিতে কমপক্ষে ৫০-৬০ মণ ভুট্টা উৎপাদন করা সম্ভব বলে তারা জানিয়েছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষে প্রায় ২৫,০০০ টাকা খরচ হয়। অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষ কম পরিশ্রমের বলে তারা জানিয়েছেন। রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার ঠাকুরদাস গ্রামের ভুট্টা চাষি ওজিয়ার রহমান জানিয়েছেন যে তিনি এই মৌসুমে প্রায় ০২ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। তিনি বলেন- যে ফসল চাষে তার প্রায় ৪০,০০০ টাকা খরচ হবে।

আমি এই মৌসুমে কমপক্ষে ১১০ থেকে ১২০ মণ ফলন আশা করছি। ফসল কাটার পর ফসল বিক্রি থেকে তিনি প্রায় ১৪০,০০০ টাকা আয়ের আশাও করেছেন। গত বছরও তিনি ভুট্টা চাষ থেকে ভালো লাভ করেছেন যা এ বছর চাষের এলাকা বাড়াতে তাকে উৎসাহিত করেছে।

নীলফামারী সদর উপজেলার চড়াইখোলা এলাকার চাষি আকবর আলী বলেন, গত বছর ভুট্টা চাষ করে তিনি সন্তোষজনক লাভ করেছেন। এই কারণে তিনি ২ বিঘা জমি বৃদ্ধি করেছেন এবং এ বছর ৪ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। ভুট্টা চাষের ফলে এই অঞ্চলের কৃষকদের আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে, তিনি বলেন। আমি গত ৮ বছর ধরে ভুট্টা চাষ করে আসছি। অন্যান্য অনেক ফসলের তুলনায় ভুট্টা চাষ বেশি লাভজনক।

রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার লালদিঘি এলাকার ভুট্টা চাষি হাকিম মিয়া বলেন, ‘আগে আমি এবং আমার এলাকার অনেক কৃষক ধান চাষ করতাম। কিন্ত উৎপাদন খরচের তুলনায় কম লাভের কারণে আমরা ধানের পরিবর্তে ভুট্টা চাষ শুরু করেছিলাম এবং বেশি লাভ পেতে শুরু করেছিলাম।

তিনি বলেন, যেহেতু তাদের জমির পরিমাণ একটু বেশি, তাই বোরো ধানের জমিতে প্রচুর পরিমাণে জল দিতে হয়, যার ফলে উৎপাদন খরচও বেশি হয়। এইসব কারণে তারা ধান চাষ কমিয়ে ভুট্টা চাষের দিকে ঝুঁকেছেন। তিনি বলেন, এ বছর তিনি ৩ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন। ভুট্টা গাছ ভালোভাবে জন্মেছে। ‘আমি আশা করছি, এই মৌসুমে ফসল বিক্রি করে ভালো ফলন এবং ভালো লাভ পাব।

মিঠাপুকুর উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বর্গাচাষি আ. রাজ্জাক, খয়রবর হোসেন জানায় গতবারের তুলনায় এলাকায় ভুট্টার আবাদ বেড়েছে। আবহাওয়ায় এ বছর ফলন ভালো হবে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ভুট্টা চাষে উৎসাহিত করার জন্য কৃষকদের এই মৌসুমে বীজ এবং সার সরবরাহ করা হয়েছে।

বিপুল লাভের কারণে, অনেক চাষি ভুট্টা চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। কৃষকরা কম খরচে এবং কম পরিশ্রমে ভুট্টা চাষ করতে পারেন। ফসলের প্রচুর ফলন অর্জনের জন্য কৃষকদের সকল ধরনের পরামর্শ এবং প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়া হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত