ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কুমারখালীতে নারী নির্যাতন মামলার আসামি ছিনিয়ে নিতে থানা ঘেরাও

কুমারখালীতে নারী নির্যাতন মামলার আসামি ছিনিয়ে নিতে থানা ঘেরাও

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মাংস চুরির অভিযোগে এক নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতনের পর মাথার চুল কেটে দেওয়া এবং বাড়িতে ভাঙচুর লুটপাটের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টা ২০ মিনিটের দিকে সাত জনকে আসামি করে মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই নারী। এ মামলায় গতকাল বুধবার সকাল ৯টার দিকে তিন নারী আসামিকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

এরপর গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের ছিনিয়ে নিতে সকাল ১১টা থেকে থানা ঘেরাও করে রাখেন শতাধিক লোক। থানা চত্বরে সকাল ১১টা ৩৫ মিনিট থেকে ৫১ মিনিট পর্যন্ত গ্রামবাসীর সঙ্গে পুলিশের ধস্তা-ধস্তি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে ওসির পিকআপ গাড়িতে আসামিদের আদালতে নিয়ে যায় পুলিশ। আসামিরা হলেন- উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামের রিপনের স্ত্রী মুক্তি খাতুন, মোমিনের স্ত্রী পারভিন খাতুন ও বক্করের স্ত্রী লিপি খাতুন।

পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত সোমবার বিকেলে প্রতিবেশীর ঘরে ঢুকে ফ্রিজ থেকে মাংস নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে ভুক্তভোগী নারীর বিরুদ্ধে। সে সময় প্রতিবেশীর স্ত্রী তাকে ধরে বাড়ির উঠানে পেয়ারা গাছের সঙ্গে দড়ি দিয়ে বেঁধে মারধর করে মাংস কেড়ে নেন। এক পর্যায়ে তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যান স্বামী। ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন রাত ৮টার দিকে তাদের বাড়িতে ভাঙচুর করে তাকে তুলে ফের প্রতিবেশীর বাড়ি নিয়ে আসেন।

সেখানে তাকে মারধর করে মাথার চুল কেটে দেন। রাত ১০টার দিকে স্বজন ও এলাকাবাসী নিয়ে সালিশ বসান স্থানীয় ইউপি সদস্য। এ সময় মারধরের শিকার নারীর দুটি গরু, একটি ছাগল ও স্বর্ণালংকারের বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।

মামলার বাদী বলেন, ষড়যন্ত্র করে চুরির নাটক সাজিয়ে আমার সঙ্গে অন্যায় করেছেন গ্রামের লোকজন। আমি বিচারের আশায় থানায় মামলা করেছি। কিন্তু মামলা তোলার জন্য সবাই হুমকি দিচ্ছে।

ঘটনার পর ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় শতাধিক ব্যক্তি নারীকে ধরে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউ মাথার কাপড় সরিয়ে দিচ্ছেন। আনন্দ-উল্লাস করছেন। কেউ কেউ এসব দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করছেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আব্দুর রশিদ বলেন, শারীরিক নির্যাতন, চুল কর্তন, ভাঙচুর-লুটপাটসহ বিভিন্ন অভিযোগে এক নারী মামলা করেছেন। মামলায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

কুমারখালী থানার ওসি মো. সোলাইমান শেখ বলেন, আসামিদের আদালতে নেওয়ার সময় গ্রামের লোকজন বাধা প্রদানের চেষ্টা করেছে। তবুও কঠোর নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে আসামিদের আদালতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত