ছাত্র প্রতিনিধি ও সমন্বয়ক পরিচয়ে টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের (ভিপি জোয়াহের) ৬ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন দখল করে ১৭ মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীকে আবাসনের চেষ্টা করায় মুচলেকার মাধ্যমে ক্ষমা চেয়ে ছাড়া পেলেন মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি। গতকাল রোববার টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিন শরিফ এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গত শনিবার রাতে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি মুচলেকা দেন।
মুচলেকায় তিনি বলেন, আমি আইনি অধিকার ব্যতিরেকে অন্যের ব্যক্তিগত বাড়িতে মানসিক ভারসাম্যহীন ১৭ জন নারী-পুরুষকে আবাসনের চেষ্টা করে অপরাধ করেছি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আমার পোস্টের কারণে ক্ষেত্র বিশেষে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হয়েছে তার দায় আমার উপর বর্তায়। আমি আমার নেতিবাচক ও বেআইনি কৃতকর্মের জন্য মানবিক বিবেচনায় ক্ষমাপ্রার্থী। তিনি আরো বলেন- ভবিষ্যতে সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হয় এমন ফেসবুক পোস্ট করা এবং ব্যক্তিগত বা সরকারি সম্পদ দখল বা ভাঙচুর করাসহ অন্য কোনো প্রকার অপরাধে লিপ্ত হব না। আমি প্রদত্ত মুচলেকা ভঙ্গ করলে প্রচলিত আইনে আমার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে তার বিপরীতে আমার কোনো আপত্তি গ্রহণযোগ্য হবে না। টাঙ্গাইল সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমিন শরিফ বলেন, মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি নামে এক নারী সাবেক সংসদ সদস্যের বাসাটি অবৈধভাবে দখল করে মানসিক ভারসাম্যহীন ১৭ জন নারী-পুরুষকে আবাসনের চেষ্টা করে।
পরে তাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে নেয়া হয়। বাড়িটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অবৈধ দখলমুক্ত করা হয় এবং মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিদের উদ্ধার করা হয়। তাদেরকে সরকারের ব্যবস্থাপনায় স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত নারী এ ধরণের কর্মকাণ্ড করে অপরাধ করেছেন মর্মে মুচলেকা দিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ করবেন না মর্মে প্রত্যয়ন দেন। মুচলেকায় তার স্বামীসহ মোট ৫ জন সাক্ষী স্বাক্ষর করেন। বিশ্ব নারী দিবস ও আত্মশুদ্ধির মাস রমজান বিবেচনায় ভুল শুধরে নেয়ার একটি সুযোগ দিতে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পরবর্তীতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরূপ পোস্ট করলে এবং সরকারি বা বেসরকারি সম্পদ ভাঙচুর বা দখলসহ অন্য কোন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হলে আইনগভাবে অধিকতর কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। অপরদিকে, জেলার বেশ কয়েকজন ছাত্র প্রতিনিধি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে ঘটনার বিষয়ে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেন। তারা মিষ্টির কর্মকান্ডের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পর্ক নেই বলে বিবৃতি দেন। পাশাপাশি তারা চাঁদাবাজি ও অবৈধ দখলের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানান। গত শনিবার সকালে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্র প্রতিনিধি ও সমন্বয়ক পরিচয়ে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি জোয়াহেরুল ইসলামের বাসার তালা ভেঙে প্রায় ১৭ নারী-পুরুষ ভারসাম্যহীন রোগী নিয়ে টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলামের (ভিপি জোয়াহের) ৬ তলা বিশিষ্ট একটি ভবন দখল করে মারইয়াম মুকাদ্দাস মিস্টি।