ঢাকা শুক্রবার, ২০ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

দুই হাজার বিঘার আমন আবাদ নিশ্চিতে অবৈধ মাছের ঘের উচ্ছেদ

দুই হাজার বিঘার আমন আবাদ নিশ্চিতে অবৈধ মাছের ঘের উচ্ছেদ

যশোরের কেশবপুরে মজিদপুর গ্রামের ৩ বিলের ২ হাজার বিঘা জমিতে আমন আবাদ নিশ্চিৎ করতে গতকাল সোমবার শত শত কৃষক বাগদা-লক্ষ্মীনাথকাটি বিলে অবৈধভাবে নির্মিত একটি মাছের ঘের উচ্ছেদ করেছে। প্রায় দেড় যুগ ধরে কৃষকদের জমি জবর দখল করে কোনো ডিড ছাড়াই অবৈধভাবে মাছের ঘেরটি করেন ঘের মালিক লুৎফর রহমান। ওই ঘের মালিকের বিরুদ্ধে কৃষকদের জমির হারির টাকা পরিশোধ না করা, অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলন করা, কৃষকদের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজির অভিযোগ দিয়ে হয়রানিসহ নানাবিধ অভিযোগ রয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার মজিদপুর গ্রামের বেজিরকুড়, বিনাকুড় ও নীরেরঝোল বিলের বর্ষার অতিরিক্ত পানি বাগদা-লক্ষ্মীনাথকাটি বিলের খাল দিয়ে নিষ্কাশন হয়। দেড়যুগ আগে বাগদা গ্রামের ঘের ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান তৎকালিন ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ম্যানেজ করে বাগদা-লক্ষ্মীনাথকাটি বিলের ২০ বিঘা জমিসহ পানি নিষ্কাশনের খাল জবর দখল করে মাছের ঘের করেন। এরপর থেকে পানি নিষ্কাশনের পথ না থাকায় মজিদপুর গ্রামের ওই ৩ বিলের ২ হাজার বিঘা জমিতে আমন আবাদ অনিশ্চিৎ হয়ে পড়ে। আমন আবাদ ব্যর্থ হওয়ায় এর আগে মজিদপুর গ্রামের শত শত কৃষক ঝুড়ি, কোদাল নিয়ে কয়েকবার ঘেরটি উচ্ছেদ করে। কিছুদিন পর ঘের মালিক আবারও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ঘেরের কার্যক্রম চালিয়ে যান। এদিকে, বিগত ৩/৪ বছর ধরে ওই ৩ বিলে কোনো আমন আবাদ হচ্ছে না। একথা মাথায় নিয়ে বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই সোমবার সকালে মজিদপুর গ্রামের শত শত কৃষক-যুবক ঝুড়ি, কোদাল নিয়ে ঘেরটি উচ্ছেদ করেন। উপজেলার বাগদা গ্রামের ব্যাংকার আব্দুল গনি অভিযোগ করেন, ঘের মালিক লুৎফর রহমান তাদের ৯ বিঘা ধানিজমি জবর দখল করে মাছের ঘের করেন। কিন্তু দেড়যুগেরও আমরা কোনো হারির টাকা পায়নি। তাদের জমির ন্যায্য হারির ২০ লাখ টাকা ঘের মালিক আত্মসাৎ করেছে। হারির টাকা চাইতে গেলে হুমকি-ধামকিসহ মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করা হয়। যে কারণে হারির টাকা আদায়সহ অবৈধ মাছের ঘের উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে তিনি গত রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছেন।

সরেজমিন ঘেরটি পরিদর্শনে দেখা গেছে, ঘেরের তিন পাশে ৩টি সেচমটর বসানো হয়েছে। বছরের শুরুতেই ওই সেচপাম্প দিয়ে ভূগর্ভের পানি উত্তোলন করে ঘেরটি ভরাট করা হয়। ঘের মালিক লুৎফর রহমান বলেন, আমার কাছে কেউ হারির টাকা পাবে না। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে কেশবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, ওই ঘের নিয়ে উভয়পক্ষই থানায় পৃথক অভিযোগ করেছে। উভয় পক্ষকে শান্ত থাকতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত