পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে নীলফামারী জেলায় কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর প্রাচুর্য দেখা দিয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলায় অবস্থিত ৩৪ হাজার ৩৮৩টি খামারে এবার প্রস্তুত করা হয়েছে ২ লাখ ৮৯ হাজার ১৫৭টি গবাদিপশু। অথচ জেলার অভ্যন্তরীণ চাহিদা রয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ১৬৬টি পশুর। এ হিসেবে চাহিদার তুলনায় প্রায় ৬৫ হাজার ৯৯১টি গবাদিপশু উদ্বৃত্ত থাকছে, যা স্থানীয় পশু খামারিদের জন্য স্বস্তির পাশাপাশি একটি অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দিকও উন্মোচন করছে। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের তথ্য অনুযায়ী, প্রস্তুতকৃত পশুগুলোর মধ্যে রয়েছে ৫২ হাজার ১০টি ষাঁড়, ৪ হাজার ২৩১টি বলদ, ২৫ হাজার ৭৯৮টি গাভী, ৮৯টি মহিষ, ১ লাখ ৯১ হাজার ৯৫৭টি ছাগল এবং ১৪ হাজার ৯৭২টি ভেড়া। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল হক বলেন, গত কয়েক বছরে খামারিদের আগ্রহ, সরকারের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও ভর্তুকি কার্যক্রম, পাশাপাশি পশুখাদ্য ও চিকিৎসার উন্নয়নের কারণে স্থানীয়ভাবে গবাদিপশু উৎপাদনে সক্ষমতা অনেক বেড়েছে। এখন আর বাইরের পশুর ওপর নির্ভর করতে হয় না। তিনি আরও জানান, নীলফামারীর গবাদিপশু জেলার চাহিদা পূরণের পর দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও সরবরাহের উপযুক্ত। তবে পরিবহন ও বিপণন ব্যবস্থায় সহজীকরণ এবং মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাব কমানোর উদ্যোগ নিতে পারলে খামারিরা ন্যায্যমূল্য পাবে ও লাভবান হবে। এদিকে, অতিরিক্ত পশু বিক্রির লক্ষ্যে জেলার বিভিন্ন খামারি এরই মধ্যে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন পশুর হাটের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। তারা বলছেন, কোরবানির মৌসুমে হঠাৎ পশু পরিবহনের চাপে যেন ভোগান্তি না হয়, সেজন্য আগে থেকেই প্রশাসনের সহায়তা দরকার।
স্থানীয় খামারি রবিউল ইসলাম বলেন, এবার খামারে প্রায় ৩০টি গরু প্রস্তুত করেছি। জেলার চাহিদার তুলনায় পশু বেশি, তাই আগেভাগেই ঢাকার পাইকারদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। যদি পরিবহন ও বাজারে প্রবেশ সহজ হয়, তাহলে ভালো দাম পাওয়া যাবে। জেলা প্রশাসনের একজন কর্মকর্তাও জানান, পশু পরিবহন ও বাজার ব্যবস্থাপনায় যাতে কোনো সমস্যা না হয়, সেজন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ শুরু হয়েছে।