পাবনার ঈশ্বরদী শহরের তীব্র যানজট কমানোর জন্য বহুদিনের দাবি থাকলেও এখনই ফ্লাইওভার ব্রিজ তৈরি হচ্ছে না। তবে বিকল্পভাবে শহরের রেলগেটের উত্তর পাশে বন্ধ হয়ে থাকা পুরনো রাস্তার নিচের সাঁকো সংস্কার করে খুলে দেয়ার কাজ শুরু করেছে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে। গত সোমবার পাকশী রেলওয়ে বিভাগের প্রকৌশলী (ডিইএন-২) বীরবল মন্ডল, ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে কাজের উদ্বোধন করেন। পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ের দেওয়া তথ্যে জানা যায়, ১৯১৫ সালে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ নির্মাণের পর দক্ষিণ ও উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগের জন্য ঈশ্বরদী রেলস্টেশন তৈরি হয়। শহরের যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে রেলগেট এবং রেললাইনের নিচ দিয়ে একটি সাঁকো তৈরি করা হয়, যেটি দিয়ে মানুষ ও ছোট যানবাহন চলাচল করত কিন্তু ১৯৯৮-৯৯ সালের দিকে কিছু ব্যক্তি সাঁকোটির দুই পাশ দখল করে দোকান-পাট গড়ে তোলেন। তখন থেকে রাস্তার নিচের ওই পথটি বন্ধ হয়ে যায়। ফলে শহরের পূর্ব ও পশ্চিম পাশের যাতায়াত পুরোপুরি রেলগেটের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে। বর্তমানে প্রতিদিন ২৫ বার রেলগেট বন্ধ রাখতে হয়, যার ফলে দুই পাশে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়।
সিএনজি, অটোরিকশা ও রিকশাচালকরা জানান, রেলগেটের কারণে দিনরাত যাত্রী নিয়ে দীর্ঘ সময় আটকে থাকতে হয়। সাঁকোটি চালু হলে এই ভোগান্তি অনেকটাই কমবে। মাদকবিরোধী সংগঠন মানাবের সভাপতি মাসুম পারভেজ কল্লোল বলেন, ঈশ্বরদী শহরের পূর্ব পাশে হাসপাতাল, পৌরসভা, ফায়ার সার্ভিসসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। পশ্চিম পাশে উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়। রেলগেট বন্ধ থাকলে দুই পাশের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। নিচের সাঁকোটি চালু হলে শহর যানজটমুক্ত হবে। ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সভাপতি আজিজুর রহমান শাহীন বলেন, নিচ দিয়ে চলাচলের পথটি সংস্কার করে চালু করার সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী। দ্রুত কাজ শেষ করা উচিত।
পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু বলেন, শহরে দিন দিন জনসংখ্যা ও যানবাহনের সংখ্যা বাড়ছে। ফ্লাইওভার না থাকায় রেলগেটের যানজট শহরবাসীর জন্য বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে। নিচের রাস্তা খুলে দিলে যানজট অনেকটাই কমবে। পাকশী রেলওয়ে বিভাগের প্রকৌশলী বীরবল মন্ডল জানান, ফ্লাইওভার নির্মাণের কিছু জটিলতা রয়েছে। তাই আপাতত পুরনো সাঁকো সংস্কার করে ছোট ও মাঝারি আকারের যানবাহনের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এতে শহরের যানজট অনেকটাই কমবে বলে আশা করা হচ্ছে।