এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ব্যবহারিক নম্বর যোগ না হওয়ায় চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার হাসাদাহ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৮৮জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের গাফলতিতে এমনটি ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।সমস্যা সমাধানের জন্য জীবননগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সালে হাসাদহ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে নিয়মিত ৬৩ জন ও অনিয়মিত ২৫ জনসহ মোট ৮৮ জন শিক্ষার্থী ভোকেশনাল বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। গত বৃহস্পতিবার এসএসসি পরীক্ষার প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের টেড ইন্সট্রাকশন বিষয়ে ব্যবহারিক পরীক্ষায় ৬৩ জন অকৃতকার্য হয়েছে। অর্ক নামের ভুক্তভোগী এক শিক্ষার্থী বলেন, সব বিষয়ে ভালো নম্বর পেয়েছি, তবুও সবকিছু শেষ। কার কী দোষ আমি জানি না। ভালো পরীক্ষা দিয়েও কেনো ব্যবহারিককে ফেল এসেছে তা জানি না- এটা তদন্ত করে সমাধান করা হোক। মিম নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ব্যবহারিকের নম্বর পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের হাত দিয়েই দেওয়া হয়। নম্বর মার্কশিটে তা যোগ না হওয়ায় সবাই ফেল করেছে। কেন এমনটা হলো, এজন্য বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দায়ী। তারা ভালোভাবে মনিটরিং করলে এমনটি হতো না। সিফাত নামে অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা সকলেই আমাদের ব্যবহারিক খাতা সময়মতো বিদ্যালয়ে জমা দিয়েছি। এটার দায় সম্পূর্ণ শিক্ষকদের। ওনাদের ব্যর্থতার দায় আমরা কেন নেব। এটার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। ভোকেশনাল বিভাগের শিক্ষক তরিকুল ইসলাম বলেন, আমরা এখান থেকে শিক্ষার্থীদের নম্বর যথাসময় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে পাঠিয়েছি। কিন্তু বোর্ড বলছে নম্বর পাননি, কারিগরি ত্রুটির কথা বলছেন তারা। তিনি আরও বলেন, বোর্ড থেকে বলা হয়েছে যে শিক্ষার্থীদের ফলাফল অকৃতকার্য এসেছে, সেগুলো নিয়ে বোর্ডে যাওয়ার জন্য। যেহেতু অনলাইনে হয়নি, তাই ২৫০০ টাকা জরিমানা দিয়ে ম্যানুয়্যালি নিয়ে যেতে হবে। আশা করি, আগামী রোববার সমাধান হয়ে যাবে। এ বিষয়ে হাসাদাহ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্টবিষয়ের শিক্ষক আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমরা বোর্ডে যোগাযোগ করেছি। আজ রোববারের মধ্যে ফলাফলে যে সমস্যা হয়েছে, তা সমাধান হবে বলে আশা দিয়েছিল প্রধান শিক্ষক; কিন্তু তার সমাধান হয়নি, পরবর্তীতে আরও এক মাস সময় চেয়েছে শিক্ষার্থীদের কাছে সমাধানের সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে প্রধান শিক্ষক। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবুল কাশেম গত রোববারে বলেন, ‘কারিগরি ত্রুটির কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে। এজন্য আমার ৬৩ ছাত্র সমস্যায় পড়েছে। এ নিয়ে ঢাকা কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে আমরা কথা বলেছি। দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। জীবননগর উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সৈয়দ আব্দুল জব্বার বলেন, বিষয়টি জানার পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি জানান, বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। রোববার বোঝা যাবে, প্র্যাকটিকালে সত্যিই ফেল এসেছে, নাকি নম্বর এন্ট্রি হয়নি। যদি নম্বর এন্ট্রির সমস্যা হয়, তাহলে সেটা সমাধানযোগ্য। তবে প্র্যাকটিকাল ফেল হলে ফলাফলে পরিবর্তন আসবে।