ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কলমাকান্দা সীমান্তে আমন ধান আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তা

কলমাকান্দা সীমান্তে আমন ধান আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তা

নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলা লেঙ্গুড়া খারনৈ রংছাতি ইউনিয়ন সীমান্তে রোপা আমন চাষে একমাত্র পাহাড়ি ঝর্ণা ও বৃষ্টির পানিই তাদের আশির্বাদ হিসেবে ভরসাস্থল। গত মৌসুমে রোপা আমন চাষে দেখা গেছে বন্যায় নদী নালা খাল বিল ডুবায় জমে থাকা পানির উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এবার সে হিসেব ভিন্ন চিত্র, কোথাও পানি নেই, চারদিকে খরা রৌদ্ররে চৌচির। মাঝে মাঝে বৃষ্টির প্রত্যাশায় আর পাহাড়ি ঝর্ণা বেয়ে সমতলে নেমে আসা পানির ওপর নির্ভর করে শুরু হয়েছে মৌসুমি ধান রোপণে রোপা আমন চাষ। এ বছর রোপা আমন চাষ নিয়ে কৃষকেরা দুশ্চিন্তায় আছেন। আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকেন, কখন বৃষ্টি হবে আর রোপিত আমনে চারা গজাবে, দুশ্চিন্তা দূর হবে, ধীরে ধীরে চারা বড় হবে, খুশিতে তাদের মন ভরে উঠবে।

গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, রোপা আমন ধান চাষ ও রোপণে কৃষক ও আদিবাসী হাজং নারীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাদের এই কর্মব্যস্ততার মাঝে সীমান্তের প্রহরী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছোট বড় পাহাড়ের টিলা তরুভীতি আকাশমনি ইউক্যালিপটাস নানা প্রজাতির গাছের ফাঁকে বসে বিশ্রাম নিতে থাকা কয়েকজন নৃ- গোষ্ঠীর নারীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই পাহাড়ি মেঘালয় সীমান্তে একমাত্র কৃষি কাজেই তাদের নিয়তি। আউশের পরে আমন চাষে তাদের জীবন জীবিকা নির্ভর করে। যাদের এতটুকু জমিজমা নেই জীবনের তাগিদে তারা কর্মহীন অবস্থায় স্বপরিবারে শহরমূখী হয়ে গেছে। পুরুষেরা শহরের বিভিন্ন পল্টিফার্মে আদিবাসী নারীরা বিভিন্ন বাসা বাড়ি গার্মেন্টে আশ্রয় নিয়েছে এলাকায় কোনো কর্মক্ষেত্র না থাকায়।

সীমান্তের খেতে খামারে কাজ করতে থাকা কৃষক ভাইদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বরাবরই প্রতি কাঠায় তিন থেকে চার মণ করে রোপা আমন ধানের ফলন হয়। এবার পানির কারণে কি অবস্থা হয় জানি না।

উপজেলা কৃষি অফিসের কোনো সহায়তা পাওয়া যায় কি না এমন প্রশ্নে তারা বলেন, আমরা সীমান্তের অনাগ্রসর জনগোষ্ঠী, আমাদের কতো সমস্যা, কোনো কর্মক্ষেত্র নেই, পাহাড়ি জঙ্গল থেকে কাটখুটা টুকিয়ে, ছড়া থেকে নুরি পাথর ও বালি তুলে জীবিকা নির্বাহ করি। আমাদের কে খবর রাখে? মাঝে মাঝে কৃষি অফিসের দুই একটা লোক আসে পরামর্শ দিয়ে যায় কিন্তু তেমন কোনো আর্থিক সহায়তা পাওয়া যায় না। নিজেরাই নিজেদের জমিজমা চাষবাস করে থাকি।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আমরা সীমান্তের কৃষকদের কল্যাণে নানা প্রযুক্তি ব্যবহারের উদ্যোগ নিয়েছি। কারিগরি, সামাজিক-অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত দিক বিবেচনায় একটি সমন্বিত ও টেকসই পানি ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা প্রণয়ন, যা সীমান্তের জলাবদ্ধতা, সেচ সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হবে। এ ছাড়াও আমাদের ইউনিয়নভিত্তিক মাঠকর্মী নিয়োগ আছে, তারা কৃষকদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করে আসছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত