তিন জেলায় বজ্রপাতে তিনজন নিহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার পৃথক সময়ের বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়।
মুন্সীগঞ্জ : শ্রীনগরের আড়িয়াল বিলে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে মো. সেলিম (২৬) নামক এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল ভোরে শ্রীনগর উপজেলার ষোলঘর ইউনিয়নের সমসাবাদ কবরস্থান সংলগ্ন আড়িয়াল বিল এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সে উপজেলার সমসাবাদ গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে। এলাকাবাসী জানান, নিহত সেলিম গত বুধবার রাতে জাল দিয়ে মাছ ধরতে আড়িয়াল বিলে যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরেও ওই এলাকায় বৃষ্টিসহ একাধিক বজ্রপাতের ঘটনা ঘটে। সকালে স্থানীয়রা আড়িয়াল সেলিমের লাশ পড়ে থাকতে দেখে নিহতের স্বজনদের খবর দিলে তারা এসে লাশ উদ্ধার করে। এলাকাবাসীর ধারণা বজ্রপাতে সেলিমের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, বজ্রপাতে সেলিমের মৃত্যু হয়েছে বলে তার পরিবার লোকজন আমাকে জানিয়েছে।
সিলেট : সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলায় বজ্রপাতে জামিল আহমদ নাবিল (১৪) নামে এক স্কুলছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
গতকাল সকালে ধানখেতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। গোয়াইনঘাট থানার ওসি তোফায়েল আহমদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নিহত নাবিল গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্ব আলীরগাঁও ইউনিয়নের কুরিহাই (লান্দু) গ্রামের বাসিন্দা জালাল উদ্দিনের ছেলে এবং আলীরগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী। নাবিলের বাবা তোফায়েল আহমদ জানান, পরিবারের গৃহস্থালির কাজে নিয়মিত সাহায্য করত তার ছেলে। ঘটনার দিন সকাল সাড়ে ৭টার দিকে বাড়ির পাশেই ধান খেতে কাজ করছিল সে। এ সময় হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পটিয়া (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামের পটিয়ায় উপজেলায় বজ্রপাতে জানে আলম (৩৫) নামের এক দিন মজুরের মৃত্যু হয়েছে। তিনি উপজেলার জিরি ইউনিয়নের কোটারপাড়ার মৃত মুহাম্মদ আবু সৈয়দের পুত্র। গতকাল বিকালে এ ঘটনা ঘটে। সে পেশায় বাঁশ দিয়ে বেড়া তৈরি কাজের শ্রমিক হিসেবে দিনমজুরি কাজ করেন। বিষয়টি জানিয়েছেন ইউপি সদস্য মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। গতকাল বাড়ির অদূরে একটি মাঠে বেড়া তৈরির কাজ করছিলেন জানে আলম। এসময় হালকা হালকা বৃষ্টি হচ্ছিল। হঠাৎ বিকট শব্দে বজ্রপাত হয়। এতে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে জানে আলম। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নওগাঁ : পত্নীতলা উপজেলায় বজ্রপাতে স্বাধীন হোসেন (২৪) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আরও দুজন আহত হয়েছেন।
গতকাল সকাল ৯টার দিকে উপজেলার পাটিচড়া ইউনিয়নের পূর্ব পাখিচড়া গ্রামের মাঠে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত স্বাধীন হোসেন উপজেলার ডোহানগর গ্রামের আব্দুর রহমান সোনারের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শী ও থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব পাখিচড়া ফসলের মাঠে স্বাধীনসহ কয়েকজন কাজ করছিল। সে সময় বৃষ্টি শুরু হলে সবাই পাশের একটি টিনের চালের ঘরে আশ্রয় নেন। তার কিছুক্ষণ পরে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই মারা যায় স্বাধীন। এ ঘটনায় বাবুলাল ও ফুলমনি আহত হন। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানে তারা চিকিৎসাধীন।
নকলা (শেরপুর) : শেরপুরের নকলায় বজ্রপাতে সুজন মিয়া (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকাল সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার পাঠাকাটা ইউনিয়নের পলাশকান্দি গ্রামের মোজাকান্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তিনি মোজাকান্দা এলাকার ফয়জল মিয়ার ২ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে দ্বিতীয় সন্তান এবং পেশায় কাঠ ফার্নিচার শ্রমিক ছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সুজন মিয়া সকালে পলাশকান্দি কাজী বাড়ির পিছনে নিজেদের জমিতে পাওয়ার টিলার দিয়ে চাষ করতে যান। গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে জমিতে চাষ দেওয়া অবস্থায় হঠাৎ বজ্রপাত ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। স্থানীয় বাসিন্দা শামীম মিয়া জানান, সুজন মিয়া নকলা বাজারের হামিদ ফার্নিচার দোকানে চাকারি করতো। তবে বোরো ও আমন মৌসুমে নিজেদের জমিতে নিজেরাই চাষাবাদ করতেন। সুজন ওই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম লোক ছিল।