
অধূমপায়ীদের স্বাস্থ্যের সুরক্ষায় একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন কার্যালয়কে সম্পূর্ণ ধূমপানমুক্ত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। পরোক্ষ ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আগত সেবাগ্রহীতাদের রক্ষা করতেই নেওয়া হয়েছে এই উদ্যোগ। নারী মৈত্রীর আয়োজনে ‘নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের কার্যালয় ধূমপানমুক্ত ঘোষণা এবং টেকসই তামাক নিয়ন্ত্রণ উদ্যোগ গ্রহণ’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে গত বুধবার সকালে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে তামাক নিয়ন্ত্রণে জাতীয় নির্দেশিকা অনুসরণ করে টেকসই কর্মসূচি বাস্তবায়নে বাজেট বরাদ্দসহ একাধিক উদ্যোগও ঘোষণা করা হয়।
সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কার্যালয়ের অভ্যন্তরে সব ধরনের তামাকজাত দ্রব্যের বিক্রয় ও ব্যবহার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করা হল। একই সঙ্গে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আইন প্রয়োগও নিশ্চিত করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক এএইচএম কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, ধূমপান শুধু ধূমপায়ীকেই নয়, বরং পাশের অধূমপায়ীকেও সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই অধূমপায়ীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা সময়ের দাবি। নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাকির হোসেন বলেন, প্রতিদিন এখানে অসংখ্য মানুষ আসে। কর্মস্থলকে ধূমপানমুক্ত করে আমরা কর্মীদের যেমন সুরক্ষা দিতে পারব, তেমনই জনসচেতনতাও গড়ে তুলতে পারব।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নারী মৈত্রীর তামাকবিরোধী মায়েদের ফোরামের আহ্বায়ক অধ্যাপক শিবানী ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, এই উদ্যোগ শুধু একটি অফিসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি বড় সামাজিক পরিবর্তনের সূচনা। আশা করি দেশের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও এই পথ অনুসরণ করবে। দেশে আইন রয়েছে, কিন্তু এর প্রয়োগ নেই। এ বিষয়ে আইনের কঠোর প্রয়োগ দরকার। শুধু ঘোষণাই নয়, নিয়মিত এর তদারকিও করতে হবে। সিটি কর্পোরেশন সূত্রে জানা গেছে, এই উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতে নগরীর অন্যান্য ওয়ার্ড, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি-বেসরকারি কার্যালয়েও ধূমপানমুক্ত কর্মপরিবেশ গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো. নূর কুতুবুল আলম, প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুল আজিজ, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আজগর হোসেন ও নারী মৈত্রীর নেতারা।