ঢাকা সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমস

এক বছরে ২১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকার রাজস্ব ঘাটতি

এক বছরে ২১৪ কোটি ৬১ লাখ টাকার রাজস্ব ঘাটতি

সদ্যসমাপ্ত ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দরে রাজস্ব আহরণে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২১৪ কোটি ৬১ লাখ ১২ হাজার টাকা। এর ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯ দশমিক ১২ শতাংশ রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতিসহ নানান কারণে এ বন্দর দিয়ে অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য আমদানি কমে যাওয়ায় রাজস্ব ঘটতি বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। বর্তমান সরকারের আমদানি নির্ভরতা কমানোর উদ্যোগে রাজস্ব আহরণে ঘাটতি দেখা দিয়েছে বলে দাবি করছেন সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমস কর্মকর্তারা।

কাস্টমস কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সোনামসজিদ স্থলবন্দরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল ১ হাজার ১২২ কোটি ৪১ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। কিন্তু এর বিপরীতে রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৯০৭ কোটি ৮০ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। ফলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৯ দশমিক ১২ শতাংশ রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, গোটা অর্থবছরের ১১টি মাসই ঘাটতি। তবে শুধুমাত্র মে মাসে রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছিল। শুধু তাই নয় ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৪১৮ কোটি এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৬৩ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণে ঘাটতি পরিলক্ষিত হয়েছে।

রাজস্ব আয়ের ঘাটতির বিষয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত কয়েকবছর ধরে সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ফল আমদানি শূন্যের কোঠায় নেমেছে। আগের তুলনায় কমেছে কৃষি-গোখাদ্য ও মসলা আমদানি। তবে পাথর আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। এছাড়া ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি, ডলারের বাজারে অস্থিরতা, ব্যবসায়ীদের ভিসা না দেওয়াসহ আরও বিভিন্ন কারণে গতি কমেছে আমদানি-রপ্তানিতে। পণ্য আমদানিতে কিছু জটিলতা বিরাজমান ও শুল্কযুক্ত পণ্যের আমদানি বাড়ালে রাজস্ব আহরণের পরিমাণ বাড়বে।

আমদানিকারক আজিজুল ইসলাম বলেন, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ডলারের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় এলসি করতে বেগ পেতে হয়েছে। এছাড়া দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি, ভারত-পাকিস্থানের যুদ্ধতে ব্যবসা-বাণিজ্য স্বাভাবিক ছিল না। বলতে গেলে ধীরগতি আমদানির কারণে রাজস্ব আয়ে ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

আরেক আমদানি-রপ্তানিকারক শফিকুল ইসলাম বলেন, শুধুমাত্র পাথর আমদানি নির্ভর হয়ে গেছে স্থলবন্দরটি। অন্যান্য কৃষিজাত-প্রাণিসম্পদ জাতীয় পণ্য আশানুরুপভাবে আমদানি হচ্ছে না। ফল আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে বললেই চলে। এভাবে আমদানি কার্যক্রম চললে কখনই রাজস্ব আহরণ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে না। কাজেই আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক করা গেলে এই স্থলবন্দর দিয়ে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

সোনামসজিদ আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি মো. একরামুল হক বলেন, অধিক শুল্কযুক্ত পণ্য যেমন- পেঁয়াজ, নারিকেল, আলু এসব পণ্যের আমদানি অনুমতিপত্র (আইপি) বন্ধ করে দিয়েছে সরকার। অন্যদিকে পোশাকশিল্পের ওপর ভারত সরকার বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। যার কারণে রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে। এ বিষয়ে সোনামসজিদ স্থলবন্দর কাস্টমসের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মো. নুরুল হাসান বলেন, বর্তমান সরকার আমদানি নির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে আলু, পেঁয়াজসহ অন্যান্য কৃষিপণ্য আমদানি না হওয়ায় রাজস্ব ঘাটতির অন্যতম কারণ। এবার দেশের বাজারে কৃষিপণ্যের দাম নাগালের মধ্যে থাকায় এসব পণ্য আমদানির প্রয়োজন হয়নি। আর এতেই কমে গেছে রাজস্ব আদায়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত