ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঈশ্বরগঞ্জে দুধ শীতলীকরণকেন্দ্র না থাকায় লোকসানে খামারিরা

ঈশ্বরগঞ্জে দুধ শীতলীকরণকেন্দ্র না থাকায় লোকসানে খামারিরা

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে দুধের চিলিং পয়েন্ট (শীতলীকরণ কেন্দ্র) না থাকায় লোকসান গুণতে হচ্ছে খামারিদের। এর ফলে উৎপাদিত দুধের সঠিক মূল্য পাচ্ছেন না খামারিরা। সংরক্ষণের অভাবে দুধ নষ্ট হওয়ায় ঘটনা ঘটছে হরহামেশাই। খামারিরা জানান, প্রচুর দুধ উৎপাদন করেও বাজারজাত করতে পারছেন না তারা। দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে এলেও দুগ্ধ শীতলীকরণের ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ দেখা যায়নি। একই সঙ্গে উৎপাদন ব্যয়ের লাগাম টানা না গেলে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে খামারিরা। জানা গেছে, ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় আনুমানিক ১৭৫টি গাভীর খামার রয়েছে। বেসরকারিভাবে ঋণের মাধ্যমে গাভি পালনে এখানে পরিবারভিত্তিক সবাই খামার গড়ে তোলেন। কম-বেশি প্রতিটি খামার থেকে প্রতিদিন ৮০ থেকে ১৫০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়। এতে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়ে ওঠেন। স্থানীয়ভাবে প্রতি লিটার দুধ ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়। স্থানীয় হাটবাজার, হোটেল ও বাসাবাড়িতে প্রতিদিন ১৫ হাজার লিটারের ওপর উৎপাদিত দুধ বিক্রি হয় না। লিটারপ্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় দুধ বিক্রি করতে হচ্ছে। এতে গাভি পালনের খরচ ওঠে না। সচেতন মহল বলছেন, উৎপাদিত দুধের সঠিক ব্যবহারের জন্য সরকারের যথাযথ দিকনির্দেশনা থাকা দরকার। একই সঙ্গে বিদেশ থেকে গুঁড়া দুধ আমদানির ক্ষেত্রেও সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণ জরুরি। পৌর এলাকার চরনিখলা গ্রামের কাসেম মিয়া জানান, তিনি চারটি বিদেশি গাভি পালন করেন। প্রতিদিন খামারে দুধ উৎপাদন হয় ১৮ থেকে ২০ লিটার। গোখাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়ভাবে দুধ বিক্রি করে লোকসান হচ্ছে।

সোহাগি ইউনিয়নের খামারি শফিকুল ইসলাম বলেন, এখন প্রায় প্রতিটি ঘরেই গাভি পালন হচ্ছে। তাই এখানে একটি চিলিং পয়েন্ট স্থাপন এখন সময়ের দাবি। এটি গড়ে উঠলে আমরা দুধ সংরক্ষণ করে ঈশ্বরগঞ্জের বাইরেও বিক্রি করতে পারব। খামারিদের দাবি, আমরা চাই খামারিরা যেন নিশ্চিত হতে পারে যে তাদের উৎপাদিত দুধ নিজেরাই বিক্রি করতে পারবে। সে সুযোগ তৈরি হলে খামারিরা উৎপাদনও বাড়াবে। উৎপাদিত দুধ যদি সহজে ও ন্যায্যমূল্যে বিক্রি করতে না পারে তখন উৎপাদনে আগ্রহ হারায়। ময়মনসিংহ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ ওয়াহেদুল আলম বলেন, সরকার খামারিদের উন্নয়নে প্রণোদনা দেওয়াসহ অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ময়মনসিংহের ত্রিশালে দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য একটি ডেইরি হাব থাকলেও জেলার কোথাও চিলিং পয়েন্ট নেই। চিলিং পয়েন্ট এখন সময়ের দাবি মাত্র। এতে লাভবান হবেন খামারিরা। ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহাবুবুল আলম বলেন, আামাদের ঈশ্বরগঞ্জ কৃষি মাতৃক আবহাওয়া সম্পন্ন একটি উপজেলা। এখানকার আবহাওয়া কৃষি এবং গবাদিপশু পালনের জন্য অতন্ত্য উপযোগী। এখানকার জনগণের ৭০ শতাংশ কৃষির সঙ্গে ওতোপ্রোতো ভাবে জড়িত। সেইসঙ্গে তারা নিয়মিত গবাদিপশু লালন-পালন করে আসছে। খামারিরা প্রাণিসম্পদ পণ্য বিশেষ করে দুধের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত থেকে প্রতিনিয়তই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত