ঢাকা মঙ্গলবার, ০৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

কালিহাতীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২০

কালিহাতীতে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ২০

টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায় বিএনপির পৃথক পৃথক কর্মসূচি বিজয় মিছিল ও সমাবেশকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও হামলায় উভয় পক্ষের অন্তত ২০ কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। আহতদের কালিহাতী উপজেলা ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের এ ঘটনার পর থেকে কালিহাতী উপজেলা সদরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। জানাগেছে, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান দিবসে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির নির্বাহী কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটোর নেতৃত্বে কালিহাতী আরএস সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে একটি বিজয় মিছিল বের করা হয়। অন্যদিকে, কালিহাতী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য লুৎফর রহমান মতিন, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদ, ড্যাব নেতা ডা. শাহ আলম, কেন্দ্রীয় মুক্তিযোদ্ধা দলের সহ-সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হালিম, কালিহাতী পৌরসভার সাবেক মেয়র আলী আকবর জব্বার ও জেলা জিয়া পরিষদের সাবেক সভাপতি আব্দুল আউয়াল দিবসটি উপলক্ষে তাদের সমর্থিত নেতাকর্মীদের নিয়ে স্থানীয় শহিদ শফি সিদ্দিকী তোরণের পাশে একটি সমাবেশ করছিলেন। বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটোর নেতৃত্বাধীন মিছিলটি সমাবেশের কাছাকাছি এলে দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে উদ্দেশ্য করে অশালীন স্লোগান দিতে থাকে। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে চলে হামলা ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। কালিহাতী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক শুকুর মাহমুদ কালিহাতী বাসস্ট্যান্ডে দলীয় কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক এক প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান, তারা শান্তিপূর্ণভাবে শহিদ শফি সিদ্দিকী চত্তরে সমাবেশ করছিলেন। দলের ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটোর নেতৃত্বাধীন মিছিলটি সমাবেশস্থল অতিক্রম করার সময় তার সমর্থিত কর্মী-সমর্থকরা সমাবেশ লাখ করে অশালীন ভাষায় স্লোগান দেয়। এ সময় তাদের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে প্রথমে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটোর কর্মী-সমর্থকরা আওয়ামী (কার্যক্রম নিষিদ্ধ) পন্থি লোকজন নিয়ে তাদের সমাবেশে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায়। পরে কালিহাতীর জাতীয়তাবাদী ঘরাণার মানুষ হামলা প্রতিহত করতে ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় তাদের ৭-৮জন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন। অন্যদিকে, কালিহাতী উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মজনু মিয়া জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটোর নেতৃত্বে তারা কালিহাতী আরএস সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে একটি বিজয় মিছিল নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে তাদের দলীয় কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে পূর্বপরিকল্পিতভাবে কালিহাতী বাসস্ট্যান্ডের কাছে লুৎফর রহমান মতিন, শুকুর মাহমুদ, ডা. শাহ আলম তালুকদার, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হালিম মিয়া, আলী আকবর জব্বার ও আব্দুল আউয়ালের নেতৃত্বে তাদের কর্মী-সমর্থকরা স্থানীয় আওয়ামী(কার্যক্রম নিষিদ্ধ) সমর্থকদের নিয়ে মিছিলের ভেতরে ঢুকে তাদের কর্মী-সমর্থকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এঘটনায় তাদের ১৫-১৬ জন কর্মী-সমর্থক আহত হয়ে কালিহাতী ও টাঙ্গাইলের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিচ্ছে। আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে কি না তা দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এ বিষয়ে টাঙ্গাইলের ভারপ্রাপ্ত সহকারী পুলিশ সুপার (কালিহাতী সার্কেল) আরিফুল ইসলাম জানান, ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি থাকায় এ অনভিপ্রেত ঘটনাটি ঘটেছে। বিজয় মিছিল নিয়ে সমাবেশের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তিনি জানান, বর্তমানে কালিহাতীর পরিস্থিতি শান্ত এবং পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কোনো মারামারি বা হাতাহাতি হয়নি। পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্ক অবস্থান নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে না বলে তিনি আশাপ্রকাশ করেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত