ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

শতকোটি টাকার সরকারি জমি সাড়ে পাঁচ লাখে বিক্রি

তদন্তে দুদক
শতকোটি টাকার সরকারি জমি সাড়ে পাঁচ লাখে বিক্রি

ময়মনসিংহ নগরীর প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ‘পাটগুদাম’ এলাকার শতকোটি টাকা মূল্যের সরকারি জমি মাত্র ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি! তাও আবার জালিয়াতির মাধ্যমে! এ চাঞ্চল্যকর ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে আদালতপাড়া থেকে প্রশাসন পর্যন্ত। ঘটনা জানাজানি হতেই সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে দ্রুত নির্দেশে দলিল স্থগিত করা হয়। গতকাল রোববার সকালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক রাজু মোহাম্মদ সারোয়ার হোসাইন এর নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি টিম সদর সাবরেজিস্ট্রার অফিস ও জেলা জজ আদালতের সংশ্লিষ্ট বিভাগে হানা দেন। দীর্ঘ সময় নথিপত্র ঘেঁটে তারা চাঞ্চল্যকর তথ্যের মুখোমুখি হন।

সূত্র জানায়, ১৯৬৩ সালে রেবতী মোহন দাস নামে একজন ব্যক্তি এই জমি আইনগতভাবে আদমজী জুট মিলস লিমিটেডের নামে হস্তান্তর করেন। পরে মিলটি বন্ধ হলে জমিটি সরকারি সম্পত্তি হিসেবে রেকর্ডভুক্ত হয়। কিন্তু, ঘটনার মোড় ঘোরে ২০২২ সালে। নিজেকে রেবতী মোহনের ছেলে দাবি করে রবীন্দ্র মোহন দাস একটি মামলা করেন জেলা প্রশাসক ও বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের বিরুদ্ধে। যদিও ২০২৪ সালের ৮ মে আদালত এই মামলা খারিজ করে দেয়। মামলা খারিজের আগেই রবীন্দ্র মোহন দাস মিরাশ উদ্দিন সুমন নামে এক ব্যক্তিকে আমমোক্তারনামা দিয়ে জমির মালিকানা দাবির ক্ষমতা প্রদান করেন। এর কিছুদিন পরই মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করে নতুন ছানি মামলা করা হয়। এই মামলা চলমান থাকা অবস্থাতেই, চলতি বছরের ৬ জুন, সরকারি ওই ৮৪ শতক জমি মাত্র ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকায় বিক্রির দলিল সম্পাদিত হয়।

দলিলে দাতার নাম রবীন্দ্র মোহন দাস থাকলেও তার পক্ষে আদালতের সিনিয়র সহকারী জজ পবন চন্দ্র বর্মণ নিজেই স্বাক্ষর করেন।

গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পরই দ্রুত নড়েচড়ে বসে দুদক ও জেলা প্রশাসন। এরইমধ্যে আদালতের পক্ষ থেকে দলিল ও ডিক্রি সাময়িক স্থগিত করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। ২৪ আগস্ট আদালতের নতুন আদেশে বলা হয় নথি উপস্থাপনসহ দলিল বাতিলের জন্য ছানি মোকাদ্দমা দায়ের করা হয়েছে। দরখাস্ত মঞ্জুর করা হলো। ২৭ এপ্রিলের ডিক্রি ও দলিল কার্যক্রম স্থগিত করা হলো। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আজিম উদ্দিন জানান, আমরা তদন্ত করে কিছু গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছি। বিষয়টি আদালতে রয়েছে ছানি মামলা হয়েছে।

দুদক কর্মকর্তা রাজু মোহাম্মদ সারোয়ার হোসাইন বলেন, গণমাধ্যমে সংবাদ দেখেই আমরা তদন্তে নামি। বেশ কয়েকটি দপ্তরের গাফিলতির প্রমাণ মিলেছে। দলিল ও ডিক্রি বাতিলের জন্য আদালতে চিঠি দিয়েছে। যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত