ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

মধুখালীতে টানা বৃষ্টিতে মরিচ খেতের ব্যাপক ক্ষতি

মধুখালীতে টানা বৃষ্টিতে মরিচ খেতের ব্যাপক ক্ষতি

দেশের চাহিদার বেশিরভাগ যোগান দেওয়া মরিচ এলাকা ফরিদপুরের মধুখালীতে গত সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে উপজেলার মরিচ চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার মেগচামী ইউনিয়নের, মেগচামী, চরমেগচামী, বসমসী, রুকুনী, জগন্নাথদী, চরবামুন্দি, মধুুপুর, শিবপুর, গোপীনাথপুর, কোরকদী ইউনিয়নের কোরকদী, পাঁচকোরকদী, রামদিয়া, বৈকণ্ঠপুর, ঘোষকান্দি, মধুখালী পৌরসভার মহিষাপুর, চরমহিষাপুর, গাজনা ইউনিয়নের আশাপুর, মথুরাপুর, গাজনা, বেলেশ্বর, বাগাট ইউনিয়নের বাগাট, ঘোপঘাট এলাকাসহ বিভিন্ন মাঠের মরিচ গাছ অতিবৃষ্টির কারণে মরে যাচ্ছে। ফলে বাজারে চাহিদার তুলনায় মরিচ সরবরাহ কমে গেছে এবং মরিচের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। দক্ষিণ অঞ্চলের সর্ববৃহৎ মরিচের হাট মধুখালী বাজারে গত শুক্রবার কাঁচা মরিচের মণ (৪০ কেজি) বিক্রি হয়েছে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা।

মেগচামী গ্রামের মরিচ চাষি সেরাপ সেখ জানান, আমার ২ একর জমিতে মরিচ ছিল, অতিবৃষ্টির কারণে জমিতে পানি জমে থাকায় মরিচ গাছ মরে যাচ্ছে। একই গ্রামের মরিচ চাষি আমিরুল ইসলাম সরদার জানান, আমার ২ একর জমিতে মরিচ ছিল। গাছে ফলন ভালো ছিল। দামও পাচ্ছিলাম কিন্তু প্রচুর বৃষ্টির কারণে মরিচ গাছ মরে গেছে। মধুখালী পৌরসভার মহিষাপুর গ্রামের মরিচ চাষি মো. তোজাম্মেল মন্ডল জানান, ২ একরের বেশি জমিতে মরিচ ছিল। বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ৫০ শতক জমিতে মরিচ আছে। গাছে মরিচের ফলন কম আছে, দাম ভালো হওয়ায় কিছু টাকা পাচ্ছি।

মধুখালী বাজারের মরিচ ব্যবসায়ী কিয়ামউদ্দিন কেয়া জানান, বাজারে মরিচের আমদানি কম থাকায় দামটা বেশি। মেগচামী ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা গৌতম বসু জানান, গত কয়েকদিনে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় মরিচের জমিতে পানি জমে গিয়েছিল। পানি জমে থাকার কারণে মরিচ গাছ মরে যাচ্ছে। কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মাহফুজ আলম জানান, মরিচ চাষ সাধারণত উঁচু জমিতে করা হয়। তারপরও অতিবৃষ্টির কারণে জমিতে পানি উঠে যাওয়ায় মরিচ গাছ মরে গেছে।

মধুখালী মরিচ বাজার আড়ৎ মালিক সমিতির সভাপতি মো. হায়দার আলী মোল্যা জানান, এই সময়ে দেশের চাহিদার বড় একটি অংশ যোগান দিয়ে থাকে এই মধুখালীর মরিচ। কয়েকদিনে বৃষ্টির কারণে মরিচ গাছ মরে গেছে। বাজারে খুবই কম পরিমাণ মরিচ আসছে যা চাহিদার তুলনায় কুবই কম। এ জন্য দামটা তুলনামূলক বেশি। মধুখালী উপেেজলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহবুব এলাহী জানান, এ বছর মধুখালী উপজেলাতে ২০ হাজার ৪ শত বিঘা জমিতে মরিচের আবাদ হয়েছিল। এ আবাদকৃত জমিতে ২১ হাজার মেট্রিকটন মরিচ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। বৃষ্টিতে মরিচের জমিতে পানি আটকে থাকায় ৪ হাজার ৮০ বিঘার জমির মরিচ গাছ মরে গেছে। মধুখালীতে চাষ হওয়া মরিচগুলো খালকুলা জাঁতের। এ ধরনের মরিচে ঝাল বেশি। জনসাধারণ এ মরিচ পছন্দ করে থাকে।

উল্লেখ্য মধুখালী বাজারের মরিচ আড়ৎ থেকে প্যাকিং করে বিদেশসহ খুলনা, বরিশাল, মাদারীপুর, ঢাকার কারওয়ান বাজার, শ্যামপুর, সাভার, ইপিজেডসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এখানকার মরিচ সরবরাহ হয়ে থাকে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত